সিডনির র্যান্ডউইকের নিজ বাড়িতে ভয়াবহ আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ বছর বয়সী এক মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ, ক্লেয়ার অস্টিন। একটি কাঁচের স্লাইডিং দরজার ভেতর দিয়ে ছুটে যাওয়ার সময় তাঁর শরীরে মারাত্মক আঘাত লাগে, যার জেরে মৃত্যু হয়।
গত শনিবার ভোরে চিৎকার ও ধাক্কাধাক্কির শব্দ শুনে প্রতিবেশী পুলিশের কাছে ফোন করেন। জরুরি পরিষেবাগুলো সাড়ে পৌঁছে ক্লেয়ারকে রক্তাক্ত অবস্থায় খুঁজে পায়, তাঁর একটি হাত আংশিক বিচ্ছিন্ন ছিল।
তাঁকে সংকটজনক অবস্থায় সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতাল নেওয়া হয় এবং তিনদিন কোমায় থাকার পর মঙ্গলবার তিনি মারা যান। পুলিশ ক্লেয়ার অস্টিনের সঙ্গী লি লাফলিনকে ঘটনাস্থলেই জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি জানান, ঘটনার আগে দুজনের মধ্যে তীব্র কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ ক্লেয়ার অস্টিনের পক্ষে লি লাফলিনের বিরুদ্ধে একটি ‘অ্যাপ্রিহেন্ডেড ভায়োলেন্স অর্ডার’ (AVO) জমা দেয়, যার শুনানি হওয়ার কথা আগামীকাল ওয়েভারলি লোকাল কোর্টে।
‘স্ট্রাইক ফোর্স লাইডক’ নামে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে পুলিশ এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত করছে। পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ডেইলি টেলিগ্রাফের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, লি লাফলিন বর্তমানে একটি মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিটে ভর্তি আছেন। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ১২ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং সিডনিতে বসবাস করছিলেন।
লি লাফলিন ‘লিড গ্রুপ’ নামে একটি কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং ‘ভিডাউরা’ নামে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারভিত্তিক স্টার্টআপেও কাজ করতেন। তবে সাম্প্রতিক সময় তাঁর প্রোফাইল দুটি কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ক্লেয়ার অস্টিন ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করলেও গত এক দশক ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছিলেন। জানা গেছে, তিনি খুব শিগগিরই কুইন্সল্যান্ডে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তিনি কাজ করেছেন একাধিক প্রতিষ্ঠানে, যার মধ্যে রয়েছে SXSW সিডনি ইভেন্ট এবং পুরস্কারপ্রাপ্ত এজেন্সি ‘দ্য মিসফিটস’।
তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তাঁর পরিবার যুক্তরাজ্য থেকে সিডনিতে ছুটে আসে এবং মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেই তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছান।
এক বন্ধু ডেইলি টেলিগ্রাফকে বলেন, “আমরা সবাই হতভম্ব… আমাদের প্রিয় ক্লেয়ার, হাসিখুশি, প্রাণবন্ত, আমাদের জীবনের আলো।”
পুলিশ যে কোনও প্রাসঙ্গিক তথ্য থাকলে ১৮০০ ৩৩৩ ০০০ নম্বরে ‘ক্রাইম স্টপার্স’-এ যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে।