মেলবোর্ন, ১৮ এপ্রিল—সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপকণ্ঠে বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত এক দুই সন্তানের মায়ের মৃতদেহ একটি আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটিকে “ভয়াবহ” এবং “অকল্পনীয় মাত্রার সহিংসতা” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
৪৫ বছর বয়সী এই নারীকে সিডনির ব্যাংকস্টাউন এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে পাঁচজন অস্ত্রধারী কালো পোশাক পরিহিত ব্যক্তি জোরপূর্বক অপহরণ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই সময় তার দুই ছেলে, একজন ১৫ বছর এবং অপরজন ৮ বছর বয়সী, পুরো ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। ছোট ছেলেটিকে বেসবল ব্যাট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বর্তমানে সে ইনডিউসড কোমায় আছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট রডনি হার্ট জানান, বড় ভাই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “একাধিক গাড়ি—যার মধ্যে একটি সাদা সেডান এবং একটি গাঢ় রঙের (সম্ভবত কালো) SUV ছিল—বাড়ির সামনে আসে। এরপর পাঁচজন মুখোশধারী ব্যক্তি বাড়িতে প্রবেশ করে, নারীর ওপর হামলা চালায় এবং তাকে জোর করে SUV-র পেছনের সিটে তুলে নিয়ে যায়।”
রাত ১০টা ৩০ মিনিটে পুলিশ ব্যাংকস্টাউন এলাকায় অপহরণের খবরে সাড়া দিয়ে ওই বাড়িতে পৌঁছায়। বাড়ির বাইরে ছোট ছেলেটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর বেভারলি হিলস এলাকার ওয়েলফেয়ার অ্যাভিনিউতে একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ির মধ্যে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, যাকে পুলিশ অপহৃত নারী বলে ধারণা করছে।
ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ NSW-এর সুপারিনটেনডেন্ট অ্যাডাম ডিউবেরি বলেন, “এটা ছিল একটি খুব দ্রুত ছড়ানো আগুন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘটনার মধ্যে, এরকম মৃতদেহ পাওয়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা।”
পুড়ে যাওয়া মৃতদেহটির পরিচয় নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় এবং তাদের কোনও গ্যাং সংযোগের প্রমাণ মেলেনি। পরিবারের বাবা ওই সময় ব্যবসায়িক কাজে রাজ্যের বাইরে ছিলেন এবং বর্তমানে সিডনিতে ফিরছেন।
সুপারিনটেনডেন্ট হার্ট বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য এখন দুই সন্তানের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা।”
Strike Force Bushfield-এর অধীনে তদন্ত চলছে এবং পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীসহ যে কোনও ব্যক্তিকে সামান্য তথ্য থাকলেও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছে।

সুপারিনটেনডেন্ট হার্ট আরও বলেন, “আমি শুধু কল্পনা করতে পারি কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে দুই ভাইয়ের জন্য—নিজের মা’কে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যেতে দেখা এবং সেই রাতেই তার দেহ পোড়া অবস্থায় পাওয়া।”
“এটি একটি চরম সহিংস ও নৃশংস অপরাধ। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা যায়।”
এবিসি নিউজ রিপোর্ট অবলম্বনে