মূল প্রতিবেদন: নীরজ চৌহান, হিন্দুস্তান টাইমস
মেলবোর্ন, ২৫ এপ্রিল— জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ বুধবার পেহেলগামে সম্প্রতি সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত চার জঙ্গির স্কেচ ও পরিচয় প্রকাশ করেছে। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক। বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এই চার হামলাকারীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের মতে, হামলায় অংশ নেওয়া চার জঙ্গি হলেন:
- আলি ভাই ওরফে তালহা (পাকিস্তানি নাগরিক)
- আসিফ ফৌজি (পাকিস্তানি নাগরিক)
- আদিল হুসেন ঠোকার (আনন্তনাগের বাসিন্দা)
- এহসান (পুলওয়ামার বাসিন্দা)
কে এই হাশিম মুসা ও আলি তালহা?
হাশিম মুসা ওরফে সুলাইমান, পাকিস্তানের নাগরিক এবং পেহেলগামে হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রী। এনআইএ সূত্রে জানা যায়, তিনি গত এক বছর ধরে কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় ছিলেন এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও অ-স্থানীয়দের উপর অন্তত তিনটি হামলায় জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি লস্কর-ই-তইয়েবা ছাড়াও অন্যান্য পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করছিলেন।
আলি তালহা, Indian Express-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি গত দুই বছর ধরে কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় ছিলেন। তথ্য অনুযায়ী, তিনি হাশিম মুসার পর উপত্যকায় প্রবেশ করেন এবং শ্রীনগরের উপকণ্ঠের দাচিগাম অরণ্যে কাজ করছিলেন।
কে এই আদিল ঠোকার?
আদিল হুসেন ঠোকার, জম্মু ও কাশ্মীরের আনন্তনাগ জেলার বাসিন্দা। তিনি ২০১৮ সালে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করেন এবং গত বছর উপত্যকায় ফিরে আসেন। পুলিশ জানায়, তিনি ” প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি জঙ্গিদের স্থানীয় গাইড হিসেবে কাজ করছিলেন।
হাশিম মুসা ও অন্যান্যদের ধরতে অভিযান চলছে
এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, লস্কর-ই-তইয়েবার ওভারগ্রাউন্ড কর্মীদের (OGWs) মাধ্যমে যারা সীমান্ত পার করে জঙ্গিদের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে, তাদের সংযোগ খুঁজছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। পাশাপাশি, TRF (The Resistance Front) এর সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজনদের সনাক্ত করতে সাইবার স্পেসে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে—যাদের মধ্যে অধিকাংশই সাবেক জঙ্গি ও ওভারগ্রাউন্ড কর্মী। প্রাথমিক তদন্তের পর অনেকে ছাড়া পেলেও, অনুসন্ধান চলমান। জঙ্গিদের ধরিয়ে দিতে সহায়ক তথ্যের জন্য ₹২০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা বৈঠক
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ, নিরাপত্তা জোরদার ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর সমর্থন কাঠামো শনাক্তের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এই হামলা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে এবং উপত্যকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।