মেলবোর্ন, ০৮ মে— ভারতের সামরিক আগ্রাসনের পর বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তানের শেয়ারবাজার।
বুধবার পাকিস্তানের প্রধান শেয়ারবাজার সূচক করাচি-১০০ শুরুর লেনদেনে ছয় হাজার ২৭২ পয়েন্ট বা প্রায় ছয় শতাংশ পড়ে যায়।
সূচকটি নেমে আসে এক লাখ সাত হাজার ২৯৬ দশমিক ৬৪-এ, যেখানে মঙ্গলবারের সমাপনী সূচক ছিল এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬৮ দশমিক ৫১।
কাশ্মীরের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ভারত। ‘অপরাশেন সিঁদুর’ নামের এই হামলায় নিহতরা বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম।
পাহালগামের নৃশংস জঙ্গি হামলার পর থেকে করাচি সূচক তিন দশমিক সাত শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে ভারতের সেনসেক্স সূচক প্রায় দেড় শতাংশ বেড়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এপ্রিল ২৩ থেকে মে ৫ পর্যন্ত করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক কেএসই প্রায় তিন দশমিক সাত শতাংশ কমেছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা সম্ভাব্য সামরিক সংঘর্ষ নিয়ে চিন্তিত।
অন্যদিকে ভারতীয় শেয়ারবাজার এই উত্তেজনার মধ্যেও স্থিতিশীলতা দেখিয়েছে।
যদিও সেনসেক্স প্রাথমিকভাবে ৬৯২ পয়েন্ট কমে ৭৯ হাজার ৯৪৮ দশমিক ৮০-তে নেমে আসে, যেখানে আগের দিনের সমাপ্তি ছিল ৮০ হাজার ৬৪১ দশমিক সাত। তবে এটি দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০০ পয়েন্টেরও বেশি বেড়ে ৮০ হাজার ৮৪৫-এ পৌঁছায়।
বাজারে ওঠানামা চলতে থাকে, এবং সকাল ১০টা নাগাদ সেনসেক্স মাত্র ৩২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য চার শতাংশ কমে ৮০ হাজার ৬০৯-এ ছিল। একই সময়ে নিফটি ৫০ সূচক ১৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য আট শতাংশ কমে ২৪ হাজার ৩৬১-এ পৌঁছায়।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা সাধারণত বাজারে তাৎক্ষণিক ওঠানামা তৈরি করে। যেমন দেখা গেছে নিফটি ও সেনসেক্স শূন্য দশমিক ছয় থেকে শূন্য দশমিক আট শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে ইতিহাস বলছে, দীর্ঘমেয়াদে বাজার ঘুরে দাঁড়ায়।
স্মার্টওয়েলথ ডট এআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা পঙ্কজ সিং বলেন, “কারগিল যুদ্ধের পর সেনসেক্স এক বছরে ৬৩ শতাংশ বেড়েছিল। পার্লামেন্ট হামলার পরের বছর ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছিল। মুম্বাই হামলার পরে সেনসেক্স ১২ মাসে ৬০ শতাংশ বেড়েছিল। অন্যদিকে বালাকোট অভিযানের পরে বছরের শেষে ১৫ শতাংশ বেড়েছিল।”
তিনি বলেন, “স্বল্পমেয়াদে সতর্কতা গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত। তবে ইতিহাস বলছে ভারতীয় বাজারে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে। যদি এর সঙ্গে বড় কোনো অর্থনৈতিক বা বৈশ্বিক ধাক্কা না থাকে, তাহলে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বিনিয়োগকারীদের উচিত ভয় নয়, মৌলিক ভিত্তির উপর নজর রাখা।”