মেলবোর্ন, ১২ মে- ইউক্রেনে ভূমিমাইন সরানোর কাজে নিযুক্ত থাকা অবস্থায় এক অস্ট্রেলীয় সাবেক সৈনিক ও তার ব্রিটিশ সহকর্মী নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে ‘Prevail Together’ নামের এক দাতব্য সংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন তারা।
এবিসি নিশ্চিত করেছে যে, নিহত অস্ট্রেলীয়র নাম নিক পার্সনস, যিনি তার সহকর্মীদের কাছে “ডেসমন্ড” নামে পরিচিত ছিলেন। গত সপ্তাহে পূর্ব ইউক্রেনের ইজিয়ুম শহরের কাছে বিস্ফোরণে আহত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ওই একই ঘটনায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সংস্থার অপর এক সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। ঘটনাটি গত মঙ্গলবার ঘটেছে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (DFAT) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তারা নিহত অস্ট্রেলীয়ের পরিবারের জন্য কনসুলার সহায়তা প্রদান করছে।
DFAT-এর এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা এই কঠিন সময়ে পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। গোপনীয়তার কারণে আমরা এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।”
নিহতের সুনির্দিষ্ট মৃত্যুর কারণ এখনও তদন্তাধীন। তবে ইউক্রেনের এক সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে এবিসি জানিয়েছে, একটি ভবনে পুঁতে রাখা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (IED) বিস্ফোরণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
নিক পার্সনস অস্ট্রেলিয়ান সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং পরবর্তীতে ইউক্রেনে ভূমিমাইন নিষ্ক্রিয়করণে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন।
Prevail Together সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “৬ মে আমরা জানতে পারি যে, আমাদের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ক্রিস্টোফার গ্যারেটসহ দলের আরও সদস্যরা একটি দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।”
ব্রিটিশ নাগরিক গ্যারেট, যিনি “Swampy” নামেও পরিচিত ছিলেন, তার দাফন ও দেশে ফেরানোর খরচ বহনের জন্য একটি অনলাইন তহবিল সংগ্রহ পেজ খোলা হয়েছে। একই সঙ্গে তার সঙ্গিনী ও কন্যাকে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তহবিল সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, “মেমোরিয়াল অনুষ্ঠানের কোনও নির্ধারিত তারিখ এখনো নেই। তবে আমরা আহত অন্য সহকর্মীদেরও চিকিৎসা, ফেরত পাঠানো এবং আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে পরিবারগুলোর সঙ্গে কাজ করছি।”
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ ক্যানবেরায় এক বিবৃতিতে নিহত পার্সনসের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত করতে পারি যে তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছিলেন না, বরং মানবিক কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “ইউক্রেন বর্তমানে ভ্রমণের জন্য সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ অঞ্চল। আমি আবারও সকল অস্ট্রেলিয়ানদের অনুরোধ করছি— কোনো অবস্থাতেই যেন ইউক্রেনে না যান।”