মেলবোর্ন, ১২ মে— আজ ভারত নিশ্চিত করেছে যে অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন একটি পাকিস্তানি মিরাজ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা শেয়ার করা একটি ভিডিওতে পাকিস্তানি মিরাজের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে।
সোমবার ভারতের প্রথমসারির গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, এদিন নয়াদিল্লিতে এক উচ্চ পর্যায়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বর্ণনা দেন, যা ৭ মে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধে চালানো হয়েছিল। ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ওই হামলাকে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা এবং পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের কিছু উপাদানের সঙ্গে যোগসাজস থাকার দাবি করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
প্রেস ব্রিফিংটি যৌথভাবে নেতৃত্ব দেন মিলিটারি অপারেশন্সের ডিরেক্টর জেনারেল (DGMO) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই, এয়ার অপারেশন্সের ডিরেক্টর জেনারেল এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে ভারতী, এবং নেভাল অপারেশন্সের ডিরেক্টর জেনারেল ভাইস অ্যাডমিরাল এ এন প্রেমোদ।
ব্রিফিংয়ে এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে ভারতী বলেন, “আমাদের যুদ্ধপরীক্ষিত সিস্টেমগুলি সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং সেগুলি তাদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো- দেশীয় আকাশপ্রতিরক্ষা সিস্টেম ‘আকাশ’ এর চমৎকার কর্মক্ষমতা।
এই ব্রিফিংয়ের পরই ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক্স হ্যান্ডেলে মিরাজ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের ভিডিও পোস্ট করা হয়, যেখানে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় দেখানো হয়।
এনডিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৭ মে সকালে পরিচালিত অপারেশন সিঁদুর প্রায় ২৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল। অভিযানে পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে চারটি এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে পাঁচটি সন্ত্রাসী অবস্থানে হামলা চালানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, এই সামরিক অপারেশনে শতাধিক সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে। লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদীন সংক্রান্ত বহু স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে।
ভারতীয় হামলার পর, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতে সামরিক অবস্থান এবং সীমান্ত শহরগুলোকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও মিসাইল হামলার শুরু করে। যার কারণে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানজুড়ে ভারতীয় শহরগুলোতে বিমান হামলার সাইরেন এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে।
ভারত উধমপুর, আদমপুর, পাঠানকোট এবং ভুজে কিছু ক্ষতির রিপোর্ট করেছে। ফেরোজপুর, পাঞ্জাবে সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে এবং রাজৌরি, কাশ্মীরের এক সরকারি কর্মচারী ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন।
এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে ভারতী বলেন, ‘পাকিস্তান দ্বারা ব্যবহৃত ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হার্ড কিল কাউন্টার-ইউএএস সিস্টেম এবং প্রশিক্ষিত ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা কর্মীদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।’