মেলবোর্ন, ১৩ মে— স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষায় তুরস্কের সঙ্গে চার দশকের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। একই সঙ্গে দলটি সব ধরনের সশস্ত্র কর্মকাণ্ড বন্ধেরও ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিকেকের সদস্য ও তুরস্কের নেতারা। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি ও আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৪ সালে পিকেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম শুরু করে। দলটির লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র গঠন করা। তুরস্ক ও পিকেকের মধ্যে সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এতে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে এবং সামাজিক উত্তেজনাও বেড়েছে।
পিকেকের এই সিদ্ধান্ত ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্কের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী ইরাক ও সিরিয়ায় উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করতে পারে—যেখানে কুর্দি বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর মিত্র হিসেবে কাজ করছে।
তুরস্ক পিকেকের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও দেশটি শান্তির নিশ্চয়তা দেয়নি। তবে পিকেকেকে নিরস্ত্র করতে জটিল আইনি কাঠামো তৈরি করছে তুরস্ক। দেশটি ও তার পশ্চিমা মিত্ররা পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
তুরস্কের ৮ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশই কুর্দি।
পিকেকের নেতা আবদুল্লাহ ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি ইস্তাম্বুলের দক্ষিণে একটি দ্বীপে বন্দি অবস্থায় আছেন। সোমবার জানানো হয়, তিনি এই নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন।
পিকেকে দল ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে একটি সুযোগ করে দিচ্ছে। তিনি মূলত কুর্দিদের বসবাস করা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে উন্নয়ন বাড়াতে পারেন—যেখানে বিদ্রোহ বহু দশক ধরে আঞ্চলিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।