মেলবোর্ন, ১৪ মে— কৌশলগত অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান দুই দেশের মধ্যে একটি কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও সামরিক চুক্তিতে সই করেছেন। রাজধানী রিয়াদে দুই দেশের মধ্যে মঙ্গলবার ৬০০ বিলিয়ন ডলারের এই বিনিয়োগ চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে সমরাস্ত্র চুক্তি প্রায় ১৪২ বিলিয়ন ডলারের।
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার এই চুক্তি ছাড়াও দেশটিতে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের চুক্তি করেছে সৌদি আরব।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, এর আওতায় সৌদি আরবকে অত্যাধুনিক যুদ্ধ সামগ্রী ও সেবা সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্রের এক ডজনেরও বেশি প্রতিরক্ষা কোম্পানি।
দুই দেশের সই করা সমঝোতায় জ্বালানি ও খনিজবিষয়ক স্মারক, ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষা সক্ষমতার জন্য আগ্রহপত্র ছাড়াও মহাকাশ ও সংক্রামক ব্যাধির বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি স্মারক রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মোহাম্মেদ বিন সালমান যখন কৌশলগত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বে সই করেছেন তখন অনুষ্ঠানস্থল ছিল করতালিতে মুখরিত।
সৌদি-মার্কিন বিনিয়োগ ফোরামে এসব চুক্তি সইয়ের পর সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশ সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। আজ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী মাসগুলোতে তা বেড়ে ১ ট্রিলিয়ন (এক হাজার বিলিয়ন) ডলারে উন্নীত হবে।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি চুক্তির আওতায় মোট পাঁচটি খাত রয়েছে। সেগুলো হলো বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন ও মহাকাশ সক্ষমতা, আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, সমুদ্র ও উপকূলীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থলবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং তথ্য ও যোগাযোগব্যবস্থা আধুনিকায়ন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দেশটির সেনাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া সৌদি আরবের সামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামরিক চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে কাজ করা হবে। অস্ত্র চুক্তি ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, গ্যাস টারবাইন, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘অসাধারণ একজন মানুষ’ অভিহিত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, সৌদি আরব একটি ‘চমৎকার জায়গা’। এখানে ‘চমৎকার মানুষ’ বসবাস করেন।
এর আগে দুই নেতার বৈঠকের সময় ট্রাম্প সৌদি যুবরাজকে তার বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ট্রাম্পকে বলতে শোনা গেছে ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যে আমরা পরস্পরকে খুব পছন্দ করি’।
উপসাগরীয় অঞ্চলে চার দিনের সফরের শুরুতে সৌদি আরবে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের এটাই তার প্রথম বড় বিদেশ সফর। এই সফরে ইসরায়েলকে ‘এড়িয়ে’ গেছেন তিনি।