মেলবোর্ন, ২২ মে— ভারতের নিষিদ্ধ ঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মাওবাদী) সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশভ রাওকে হত্যার দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
বুধবার বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের পোস্টে এ দাবি করেন।
তিনি লিখেছেন, “নকশালবাদ নির্মূলের লড়াইয়ে এক ঐতিহাসিক সাফল্য। আজ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে এক অভিযানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ২৭ জন ভয়ঙ্কর মাওবাদীকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নকশাল আন্দোলনের শীর্ষ নেতা, সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক নামবালা কেশব রাও, ওরফে বাসবরাজু। তিনি এই চরমপন্থী আন্দোলনের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন।”
অমিত শাহ আরও লিখেছেন, “গত তিন দশকের নকশাল দমনে এটি প্রথমবারের মতো যখন সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের কোনও শীর্ষ নেতাকে আমাদের বাহিনী নির্মূল করতে পেরেছে। এই সাফল্য ভারতের নিরাপত্তা ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।”
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, কেশভরাও বাসভরাজ নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা শেষে মাওবাদে জড়িয়ে পড়েন। ৬৮ বছর বয়সী বাসভকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এক কোটি রুপির পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ছত্তিশগড়সহ বিভিন্ন রাজ্য।
২০১০ সালে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর ৭৫ সদস্যকে হত্যার পেছনে বাসভরাজ জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
মাওবাদীদের নির্মূলে ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমান্তে ২১ দিনব্যাপী সামরিক অভিযান চালিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট নামের এই অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে।
২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদী আন্দোলনকে পুরোপুরি নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন অমিত শাহ।
১৯৬৭ সালে হিমালয়ের পাদদেশের নকশালবাড়ি গ্রামে জোতদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নকশালবাড়ি আন্দোলন শুরু হয়। পরে পাঁচ দশক ধরে এটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সশস্ত্র আন্দোলন হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদী আন্দোলনে ১২ হাজারের বেশি বিদ্রোহী, সেনা ও সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
মাওবাদীরা দাবি করেন, দরিদ্রদের জন্য ভূমি ও চাকরি, সর্বোপরি একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তারা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভারতের আদিবাসী অধ্যুষিত মধ্যাঞ্চলে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের অবস্থানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।