মেলবোর্ন, ২২ মে— গত কয়েকদিন টানা আন্দোলনের পর আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পাঠে বাধা নেই বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইশরাক হোসেনের শপথ স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আনন্দ মিছিল করেছে ইশরাকের সমর্থকরা। তবে এখনি রাজপথ ছাড়বেন না তারা। দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজপথে থাকা ইশরাকের সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন ।
ইশরাক হোসেনের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ নিতে আর কোনো বাধা নেই। যদি শপথ না পড়ানো হয়, সেটা হবে আদালত অবমাননা।
এর আগে, বুধবার রিট আবেদনের ওপর দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। এদিন আদেশ দেয়ার কথা থাকলেও দুই পক্ষের পুনরায় শুনানি হয়। এরপর আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করে হাইকোর্ট।
গত ১৪ই মে বিএনপির এই নেতাকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
গত ৫ই অগাস্ট সরকার পতনের পর দেশের সব সিটি মেয়রকে অপসারণ করা হয়। এমন অবস্থায় গেল ২৭শে মার্চ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২৭শে এপ্রিল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। একইদিন ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে লিগ্যাল নোটিশ দেন দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ ও ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
এদিকে আন্দোলনে অবস্থানকালে ইশরাক হোসেন জানান, মেয়র পদে রায় পক্ষে এলেও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ চান তিনি। সেই সঙ্গে পদত্যাগ চান আরেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলমেরও।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনতে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, দ্বিতীয় আরেকজন মাহফুজ আলম, তথ্য উপদেষ্টা, তাকেও পদত্যাগ করতে হবে।’
যার প্রেক্ষিতে, আজ ভোর থেকেই বাড়তে থাকে নেতাকর্মীর সংখ্যা। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে যোগদান করে খণ্ড খণ্ড মিছিল। যার প্রেক্ষিতে বন্ধ করে দেয়া হয় কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবনের দিকে চলাচলের সড়ক।
এ সময়, কর্মীরা দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। যমুনার মুখে বাড়ানো হয় পুলিশের উপস্থিতি। সকাল থেকে এপিবিএন, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনীও।