মেলবোর্ন, ২৪ মে— যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত ক্যাপিটাল জিউইশ মিউজিয়ামের সামনে দুই ইসরায়েলি দূতাবাসকর্মীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী এলিয়াস রড্রিগেজ প্রায় ২১টি গুলি চালিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও আদালত সূত্র। সিসিটিভি ফুটেজ এবং আদালতের নথি অনুযায়ী, ৩১ বছর বয়সী এলিয়াস রড্রিগেজ বুধবার রাতে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী — ২৮ বছর বয়সী ইয়ারন লিশিনস্কি এবং ২৬ বছর বয়সী সারাহ মিলগ্রিম — এর ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। ঘটনাস্থলে দুজনই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
আদালতের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভিকটিমরা মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর রড্রিগেজ আবার তাদের উপর ঝুঁকে গুলি চালান। এরপর সারাহ মিলগ্রিম যখন হামাগুড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি তার পেছনে ধাওয়া করে আরও একাধিকবার গুলি করেন। একপর্যায়ে তিনি আগ্নেয়াস্ত্রটি পুনরায় রিলোড করে মিলগ্রিমকে ফের গুলি করেন।
পুলিশ জানায়, রড্রিগেজ একটি উন্নতমানের জার্মান H&K 9mm পিস্তল ব্যবহার করেন, যা তিনি কয়েক বছর আগে কিনেছিলেন। যদিও নিহতদের শরীরে কতবার গুলি লেগেছে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
শিকাগো থেকে আগত রড্রিগেজ আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন বামপন্থী প্রতিবাদে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ওয়াশিংটন ডিসিতে আসেন এবং বন্দুকটি নিয়মমাফিক ডিক্লেয়ারও করেন।
বৃহস্পতিবার, ফেডারেল আদালতে তার বিরুদ্ধে প্রথম-ডিগ্রির হত্যা, বিদেশি কর্মকর্তাকে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড এবং সহিংস অপরাধে অস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়। আদালতে রড্রিগেজ বলেন, ঘটনার সময় তিনি কোনও মাদক বা অ্যালকোহলের প্রভাবে ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ডের সাজা হতে পারে।
হত্যাকাণ্ডটি ঘটে সন্ধ্যা ৯টার কিছু পর, যখন লিশিনস্কি ও মিলগ্রিম আমেরিকান জিউইশ কমিটির আয়োজিত ACCESS ইয়ং ডিপ্লোম্যাটস রিসেপশন থেকে বের হচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার ঠিক আগে রড্রিগেজকে জাদুঘরের সামনে অস্থিরভাবে হাঁটতে দেখা যায়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রড্রিগেজ একটি লাল কেফিয়াহ বের করে বারবার চিৎকার করে বলেন “ফ্রি প্যালেস্টাইন”। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি স্যুট জ্যাকেট ও প্যান্ট পরিহিত রড্রিগেজকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার পেছনে একটি ঘৃণাবিদ্বেষী উদ্দেশ্য রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা এখন অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ৯০০ শব্দের একটি ম্যানিফেস্টো পরীক্ষা করছেন, যা রড্রিগেজের নামে ছড়িয়ে পড়েছে। রড্রিগেজের গ্রেফতারের ঠিক পরেই ম্যানিফেস্টোটি প্রকাশ পায়।
এলিয়াস রড্রিগেজ আগামী ১৮ জুন প্রাথমিক শুনানির জন্য আদালতে হাজির হবেন।