মেলবোর্ন ৩১ মে – এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান মা জুলি ফিটসিমন্স (৬৫), যিনি তার মেয়ের মৃত্যুর পর গঠিত একটি ট্রাভেল সেফটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাণভোমরা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনির এই নারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেরিডান, ওয়াইয়োমিং এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ি চাপায় নিহত হন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম The Sheridan Press জানায়, দুর্ঘটনার পর তাঁকে শেরিডান মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যু ঘটে ব্লান্ট ফোর্স ট্রমার কারণে।

জুলি ফিটসিমন্স ছিলেন ‘নিকোল ফিটসিমন্স ফাউন্ডেশন’-এর প্রধান উদ্যোক্তা, যেটি তিনি গঠন করেন তার মেয়ে নিকোল ফিটসিমন্সের স্মরণে—নিকোল ২০১২ সালে থাইল্যান্ডে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।
শুক্রবার জুলির ছোট মেয়ে কেট ফিটসিমন্স ফাউন্ডেশনের ইনস্টাগ্রাম পেজে মায়ের মৃত্যুর খবর জানান। তিনি লেখেন, “ভাঙা হৃদয়ে আমরা জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় মা এবং নিকোল ফাউন্ডেশনের প্রধান জুলি ফিটসিমন্স গতকাল এক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।”
কেট আরও বলেন, “তিনি আমাদের পরিবারের স্তম্ভ ছিলেন, যার উপস্থিতি সবসময় আনন্দময় ছিল এবং যাকে সবাই ভালোবাসতেন। আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং অনুরোধ করছি যেন আমাদের কিছুটা সময় ও পরিসর দেওয়া হয় মাকে ঘরে ফেরানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য।”
“এ মুহূর্তে আমরা এটুকু স্বান্তনা নিচ্ছি যে, মা আবার তার প্রিয় মেয়ে নিকোলের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। ফিটজি পরিবার আর কখনও আগের মতো থাকবে না, কিন্তু আমরা আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবো, যেমনটা তাঁরা আমাদের চেয়েছিলেন।”
নিকোল ফিটসিমন্স ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়ার তরুণদের জন্য ভ্রমণ নিরাপত্তা শিক্ষাদান এবং পারফর্মিং আর্টস ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।
জুলির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অসংখ্য মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছেন। কেউ তাঁকে বলেছেন, “প্রত্যেক পরিসরের প্রাণ। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাতেন না, স্বপ্নকে বাস্তব করতেন তার উদারতা, সাহস ও ভালোবাসা দিয়ে।”
অন্য একজন বলেন, “তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ মানবিক, উদার, যত্নবান বন্ধু এবং একজন প্রেরণাদায়ী সহকর্মী।”
কুক আসনের এমপি সাইমন কেনেডি বলেন, “জুলি ছিলেন এই ফাউন্ডেশনের চালিকাশক্তি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যার দৃঢ়তা ও সহানুভূতি বহু মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সৌভাগ্যবান ছিলাম তাঁর কাজ কাছ থেকে দেখার। ব্যক্তিগত হৃদয়ভাঙা ঘটনা তিনি রূপান্তর করেছিলেন তরুণ অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ইতিবাচক প্রভাব হিসেবে। জুলির আত্মা যেন শান্তিতে বিশ্রাম নেন তার প্রিয় মেয়ে নিকোলের পাশে। তার ভালোবাসা, সহনশীলতা ও সেবার উত্তরাধিকার প্রজন্ম ধরে আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাবে।”