মেলবোর্ন, ১ জুন—তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভূমিধস ও বন্যায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে রাজ্যগুলো ১২ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলো হলো মিজোরাম, আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা ও অরুণাচল প্রদেশ। এসব এলাকায় সড়ক ধ্বংস হয়েছে, ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধার তৎপরতা চলছে। তবে টানা ভারী বৃষ্টি ও অবকাঠামোগত ক্ষতির কারণে উদ্ধারকাজে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
আসাম
আসামে ভূমিধসে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। টানা বৃষ্টিতে ১২ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
মিজোরাম
মিজোরামের দক্ষিণাঞ্চলের লংতলাই শহরে শুক্রবার রাতের দিকে টানা বৃষ্টিতে একটি বড় ভূমিধসে তিনটি ভবন ধসে পড়ে। এতে অন্তত আটজন মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। লংতলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টানা বৃষ্টি ও সীমিত যন্ত্রপাতির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুজনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
থিংখা গ্রামের কাছে মোতায়েন তৃতীয় ব্যাটালিয়নের ইন্ডিয়ান রিজার্ভ পুলিশ উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে।
ভূমিধসটি লংতলাইয়ের বাণিজ্যিক এলাকা চানমারিতে আঘাত হানে। যেখানে ধসে পড়া ভবনগুলো আবাসিক এবং বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হতো। একটি তলায় একটি হোটেল ছিল, যেখানে মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছিল।
ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার শোনা গেছে বলে জানা গেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইয়ং লাই অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএলএ) উদ্ধারকাজ চললেও টানা বৃষ্টি ধ্বংসস্তূপ সরাতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওয়াইএলএয়ের নেতা এলভিস লালথাংজুয়ালা বলেন, “ভূমিধসের ঠিক আগে বড় শব্দ হয়েছিল। তখন হোটেল থেকে প্রায় ১৫ জন পালাতে পেরেছিলেন। যন্ত্রপাতি ও মেশিনের অভাবে ধ্বংসস্তূপ সরানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মিলে আটকে পড়াদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”