মেলবোর্ন ২ জুন
শ্রেয়াসের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে মুম্বাইকে হারিয়ে ১১ বছর পর ফাইনালে পাঞ্জাব। এই জয়ে নিশ্চিত হলো চলতি আসরে আইপিএল ইতিহাসে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে।
শ্রেয়াসের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে মুম্বাইকে হারিয়ে ১১ বছর পর ফাইনালে প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ২৩ রান, হাতে ৫ উইকেট। চাপের ম্যাচে এই সমীকরণ কঠিন হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তেমন কিছু হতে দিলেন না শ্রেয়াস আইয়ার। অশ্বিনি কুমারের করা ১৯তম ওভারে চার ছক্কায় ২৬ রান নিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দিলেন পাঞ্জাব কিংস অধিনায়ক।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ৫ উইকেটে জিতেছে পাঞ্জাব। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ২০৩ রান তারা ছাড়িয়ে গেছে ৬ বল বাকি থাকতে।
৪১ বলে আট ছক্কা ও পাঁচ চারে অপরাজিত ৮৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে পাঞ্জাবের জয়ের নায়ক শ্রেয়াস। আগামী মঙ্গলবার আহমেদাবাদেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হবে পাঞ্জাব। তাতে নিশ্চিত হয়ে গেল অষ্টাদশ আসরে নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে আইপিএল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রোহিত শার্মাকে হারায় মুম্বাই। প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের বাকি ছয় জনই দুই অঙ্ক স্পর্শ করায় এর খুব একটা প্রভাব পড়েনি তাদের ইনিংসে।
তিলাক ভার্মার সঙ্গে ৫১ রানের জুটিকে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন জনি বেয়ারস্টো। এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান ২৪ বলে দুই ছক্কা ও তিন চারে করেন ৩৮ রান।
তিলাক ও সূযকুমার যাদব খেলেন ৪৪ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস। তিলাকের ২৯ বলের ইনিংস গড়া দুটি করে ছক্কা ও চারে। সূর্যের ইনিংস সাজান তিন ছক্কা ও চরটি করে চারে।
শেষের দিকে নামান ধিরের খুনে ব্যাটিংয়ে ২০৩ পর্যন্ত যায় মুম্বাইয়ের সংগ্রহ। নামান ১৮ বলে ৭ চারে খেলেন ৩৭ রানের দারুণ ইনিংস।
রান তাড়ায় শুরুতেই প্রাভসিমরান সিংকে হারায় পাঞ্জাব। ঝড়ের আভাস দিয়েও বেশিদূর যেতে পারেননি আরেক ওপেনার প্রিয়ানশ আরিয়া।
২১ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন জশ ইংলিস। চতুর্থ উইকেটে শ্রেয়াসের সঙ্গে ৯২ রানের জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন নেহাল ওয়াধেরা। ২৯ বলে ৪৮ রান করে তিনি ফিরে যান। পরে শশাঙ্ক সিং দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় পাঞ্জাব।
কিন্তু এদিন শ্রেয়াস যেন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে কেবল ১০১ রান করে বড় ব্যবধানে হারের পর তিনি ব্যাটসম্যানদের শট নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এদিন নিজেই দেখালেন কীভাবে ব্যাটিং করা উচিত। তার অধিনায়কোচিত ইনিংসেই মুম্বাইকে হারিয়ে দিল পাঞ্জাব।
শ্রেয়াসকে ফেরাতে একটু ঝুঁকি নিয়েই ১৭তম ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট এবং ১৮তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর কোটা শেষ করে ফেলেন মুম্বাই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। দুই অভিজ্ঞ পেসারের বলেই একটি করে চার মেরে দলকে পথেই রাখেন শ্রেয়াস। পরে চারটি ছক্কায় ইতি টানেন পাঞ্জাবের ১১ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার।
এবার ১৮ বছরের আরেকটি অপেক্ষা অবসানের চ্যালেঞ্জ শ্রেয়াসদের সামনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ২০৩/৬ (রোহিত ৮, বেয়ারস্টো ৩৮, তিলাক ৪৪, সুরিয়াকুমার ৪৪, হার্দিক ১৫, নামান ৩৭, বাওয়া ৮, স্যান্টনার ০; আর্শদিপ ৪-০-৪৪-০, জেমিসন ৪-০-৩০-১, স্টয়নিস ১-০-১৪-১, ওমারজাই ৪-০-৪৩-২, ভিজেয়কুমার ৩-০-৩০-১, চেহেল ৪-০-৩৯-১)
পাঞ্জাব কিংস: ১৯ ওভারে ২০৭/৫ (প্রিয়ানশ ২০, প্রাভসিমরান ৬, ইংলিস ৩৮, আইয়ার ৮৭, ওয়াধেরা ৪৮, শশাঙ্ক ২, স্টয়নিস ২; বোল্ট ৪-০-৩৮-১, টপলি ৩-০-৪০-০, বুমরাহ ৪-০-৪০-০, অশ্বিনি ৪-০-৫৫-২, স্যান্টনার ২-০-১৫-০, পান্ডিয়া ২-০-১৯-১ )
ফল: ৫ উইকেটে জয়ী পাঞ্জাব কিংস
ম্যান অব দা ম্যাচ: শ্রেয়াস আইয়ার