মেলবোর্ন, ০৩ জুন— বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আর পাকিস্তান—এই দুই জাতির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। অতীতের ভুল শুধরে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার লাহোরের গভর্নর হাউসে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের সম্মানে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—পাঞ্জাবের গভর্নর সরদার সেলিম হায়দার খান, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি, পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন, বিসিবির অপারেশনস প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিমসহ দুই দেশের ক্রিকেটার ও কর্মকর্তারা।
জারদারি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগ- সব ক্ষেত্রেই সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় পাকিস্তান। এটা একদিনে হবে না। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে, মানুষে বিনিয়োগ করতে হবে, আর এমন সমাধান বের করতে হবে যাতে দুই দেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।”
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “বাংলা জাতি এই অঞ্চলের প্রাচীনতম ও গৌরবময় জাতিগুলোর একটি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে সফলতার প্রতীক-অর্থনীতিতেও, মানবসম্পদেও। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এবং পাকিস্তানও তাদের পাশে থাকবে।”
১৯৭১ সালের বিচ্ছেদের প্রসঙ্গে এসে জারদারি বলেন, “আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, কিন্তু একসময় আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। সেই কষ্টের স্মৃতি আমাদের আছে, নতুন প্রজন্ম হয়তো জানে না- কীভাবে আমরা একে অপরের হৃদয় ভেঙে ফেলেছিলাম। এখন সময় এসেছে সেই হৃদয়গুলো জোড়া লাগানোর।”
ক্রিকেটের সংযোগক্ষমতাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, “ক্রিকেট আমাদের একত্র করে। আমি খুশি যে আপনাদের পাকিস্তানে, লাহোরে স্বাগত জানাতে পারছি। আশা করি ভবিষ্যতে আরও এমন সফর হবে।”
জারদারি জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে যাননি, তবে ইচ্ছা আছে আবার ঢাকা সফরের। পেটারো ক্যাডেট কলেজে ছাত্রাবস্থায় তার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বাংলাদেশি, যাদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ আছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের দূতকে তিনি আশ্বস্ত করেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তিনি পূর্ণ সমর্থন দেবেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে তিনি ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান।
পাশাপাশি পাকিস্তানের তরুণ ক্রিকেটারদেরও উৎসাহ দিয়ে বলেন, “এখন সময় তোমাদের। বিশ্ব এখন তরুণ, তোমরাই ভবিষ্যতের গর্ব। আমরা আমাদের সময় দেখে ফেলেছি, এবার তোমাদের সময়।”
তবে প্রেসিডেন্টের সংবর্ধনা পেলেও পাকিস্তান সফর সুখকর হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবকয়টি ম্যাচই তারা বড় ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিকদের কাছে।