মেলবোর্ন, ০৪ জুন— পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচিতে সোমবার শেষ রাতে এক নাটকীয় জেল ভাঙার ঘটনায় দুই শতাধিক বন্দি পালিয়ে গেছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হালকা ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বন্দিদের সেল থেকে সরিয়ে নেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানান, রাতের শেষভাগে এই ঘটনার সময় এক বন্দি নিহত এবং তিনজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হন।
সিন্ধ প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান বলেন, “ভূমিকম্পের সময় বন্দিদের নিরাপদে সেল থেকে বের করা হয়। তারা তখনও সেলের বাইরে ছিল। এ সময় হঠাৎ রক্ষীদের ওপর বন্দিরা হামলা করে। তাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। গুলি চালায় এবং পালিয়ে যায়।”
সিন্ধ প্রদেশের রাজধানী করাচিতে অবস্থিত ওই কারাগার থেকে ২১৬ জন বন্দি পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা কাশিফ আব্বাসি।
মঙ্গলবার সকালে তিনি জানান, এর মধ্যে ৭৮ জনকে এরই মধ্যে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, বাকিদের ধরতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে। পলায়নকারী বন্দিদের কেউই সন্ত্রাসবাদ বা উগ্রপন্থার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন ছিলেন না।
সিন্ধুর ইন্সপেক্টর জেনারেল গোলাম নবী মেমন কারাগার পরিদর্শন শেষে জানান, কারাগারে অধিকাংশ বন্দি মাদক সংশ্লিষ্ট মামলায় আটক। যাদের অনেকেই মানসিক রোগে আক্রান্ত।
আদালতে স্থানান্তরের সময় মাঝে মাঝে বন্দি পালানোর ঘটনা ঘটলেও, এ ধরনের পূর্ণমাত্রার জেল ভাঙা পাকিস্তানে অত্যন্ত বিরল।
এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় জেল ভাঙার ঘটনা, যা ২০১৩ সালের দেরা ইসমাইল খানে তালেবান হামলার কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময়ও দুই শতাধিক বন্দী পালিয়ে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, রবিবার সকাল ১০টা ২৫ থেকে সোমবার সকাল ১০টা ২৫ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট ছয়বার ভূমিকম্প হয়েছে করাচিতে। আতঙ্ক ছড়ালেও ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
দেশটির ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা পিএসসি’র শীর্ষ কর্মকর্তা আমির হায়দার জিও নিউজকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটির মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬ এবং সবচেয়ে দুর্বলটির মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ২।
সবগুলো এপিসেন্টার ছিল করাচির কায়দাবাদ এলাকায়, ভূপৃষ্ঠের ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার গভীরে।