মেলবোর্ন ১১ জুন ২০২৫- সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ব্যক্তি পাকিস্তানে স্ত্রী ও এক বছরের সন্তানকে পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানবন্দরে ফেলে রেখে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার ঘটনায় মানব পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ (এএফপি) জানায়, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক নারী অভিযোগ দায়ের করেন, তাঁর স্বামী তাদের একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া থেকে পাকিস্তান নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে এবং সন্তানকে বিমানবন্দরে ফেলে চলে যান এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নিয়ে নেন।
এএফপির দাবি, অভিযুক্ত ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ২০২৪ সালের আগস্টে প্রতারণার মাধ্যমে স্ত্রী ও সন্তানকে পাকিস্তান সফরে রাজি করান। পাকিস্তানে পৌঁছানোর পর তিনি সন্তানের পাসপোর্ট রেখে দেন এবং স্ত্রী ও সন্তানকে সেখানে ফেলে রেখে একা অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন।
পরে ২০২৪ সালের নভেম্বরে তিনি প্রতারণার মাধ্যমে স্ত্রীর অস্ট্রেলিয়ান ভিসা বাতিল করে দেন এবং সন্তানের পাসপোর্ট নিজের কাছেই রেখে দেন। স্ত্রী অবশেষে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসে বিষয়টি এএফপিকে জানান।
এএফপি পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণকারী শিশুটিকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে।
এএফপি বৃহস্পতিবার সিডনির অস্ট্রাল এলাকায় ওই ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও নথিপত্র জব্দ করে। এরপর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে কাউকে অস্ট্রেলিয়া থেকে পাচার করার দুইটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। এছাড়াও, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহারের অভিযোগও আনা হয়েছে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
এএফপির ডিটেকটিভ অ্যাক্টিং সুপারিনটেনডেন্ট লুক নিডহ্যাম বলেন, “এই ঘটনাটি ‘এক্সিট ট্রাফিকিং’-এর একটি সম্ভাব্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কাউকে বিদেশে যেতে বাধ্য করা কিংবা উৎসাহিত করে তার অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার পথ বন্ধ করে দেওয়া একটি গুরুতর অপরাধ।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের অপরাধ অনেক সময় পারিবারিক পরিসরে ঘটে এবং প্রায়ই রিপোর্টই করা হয় না। এএফপি সকল অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং ভুক্তভোগীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুরক্ষা দেবে।”
এএফপি সকল নাগরিককে আহ্বান জানিয়েছে, কেউ যদি মনে করেন তিনি বা তাঁর পরিচিত কেউ এ ধরনের অপরাধের শিকার হয়েছেন, তাহলে যেন অবিলম্বে যোগাযোগ করেন।