মেলবোর্ন, ১৪ জুন— যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ইরানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “সব কিছু শেষ হওয়ার আগে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে সম্মত হও।”
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক নেতারা টার্গেট হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো ট্রাম্প এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে ভবিষ্যতে ইরানের বিরুদ্ধে আরও ‘নির্মম’ হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।
পোস্টে তিনি বলেন, “আমি ইরানকে বহুবার শান্তিপূর্ণ আলোচনার সুযোগ দিয়েছি। স্পষ্টভাবে বলেছিলাম, শুধু চুক্তিটা করে ফেলো। কিন্তু তারা তা করতে পারেনি।”
ট্রাম্প আরও লেখেন, “ইরানি নেতারা জানতো না কী আসতে যাচ্ছে। এখন তারা সবাই মৃত এবং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে চলেছে।”
তিনি বলেন, “এরমধ্যে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই রক্তপাত বন্ধ করার এখনো সময় আছে। যদি ইরান এখনই চুক্তিতে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতের হামলাগুলো হবে আরও নির্মম আর শেষ পর্যন্ত কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।”
ট্রাম্পের এই কড়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েল এককভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেছে। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
এদিকে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত ষষ্ঠ দফার ইরান-মার্কিন পরমাণু আলোচনা স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও ট্রাম্প প্রশাসন এখনো আলোচনার আশায় আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এরইমধ্যে ওমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যাতে আলোচনার প্রক্রিয়া বন্ধ না হয়। তবে সূত্র বলছে, এই সপ্তাহে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়া ‘খুবই অনিশ্চিত’।
উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহু দফা আলোচনা সত্ত্বেও এখনো কার্যকর কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি। ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘সার্বভৌম অধিকার’ হিসেবে দেখছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, তিনি এখন আগের তুলনায় কম আশাবাদী এবং মনে করেন, “তেহরান সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছে।”