বিশেষ প্রতিবেদন, OTN Bangla
মেলবোর্ন, ১৭ জুন— ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাত চতুর্থ দিনে প্রবেশ করেছে, এবং পরিস্থিতি প্রতিদিনই নতুন মোড় নিচ্ছে। এর মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে নিয়ে একটি নতুন হুমকি এবং দাবি উত্থাপন করেছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
তেহরানের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের বার্তা:
ট্রাম্প এক নাটকীয় ঘোষণায় তেহরানের ১ কোটিরও বেশি বাসিন্দাকে শহর ত্যাগের আহ্বান জানান, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, “পরবর্তী দুই দিনের মধ্যেই আপনি দেখতে পাবেন কী ঘটতে যাচ্ছে।”
তেহরানের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি শুধু চাই, মানুষ নিরাপদে থাকুক।’
ইসরায়েলি হামলা এবং ইরানের পাল্টা জবাব:
তেল আবিবে সোমবার আবারও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, যা চতুর্থ দিনের মতো টানা সংঘাতকে অব্যাহত রাখল। ইরান বলছে, যতক্ষণ না ইসরায়েল হামলা বন্ধ করছে, তারা পিছু হটবে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, “আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলকে থামিয়ে দেবে – যদি হামলা বন্ধ না হয়, তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। সৌজন্যে-এপি
জি৭ সম্মেলনে মার্কিন অবস্থান:

জি৭ সম্মেলনে ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ সংক্রান্ত একটি সম্মিলিত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে বাধা দিতে হবে। তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত জোটের মধ্যে মতভেদ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, “শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, আমরা চাই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সম্পূর্ণ অবসান।”
ইসরায়েলের দাবি: ইরানের শীর্ষ সেনা কমান্ডার নিহত:
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, তারা তেহরানের কেন্দ্রে এক “স্টাফড কমান্ড সেন্টারে” আকস্মিক বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের শীর্ষ সেনা কমান্ডার আলী শাদমানিকে হত্যা করেছে। আইডিএফ-এর ভাষ্যমতে, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেইর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং যুদ্ধকালীন চিফ অব স্টাফ ছিলেন।
ইসরায়েলে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, এখনও হতাহতের খবর নেই:
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (MDA) জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় জরুরি পরিষেবা দল মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলি পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তারা তেল আবিব সহ আশপাশের এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র পতনের স্থানগুলোতে কাজ করছে।
এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যকে এক ভয়াবহ যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, ইসরায়েলের পরপর আক্রমণ, এবং ইরানের পাল্টা হুমকি – সব মিলিয়ে এই সংঘাত একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সংকটে রূপ নিচ্ছে।