শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘দেবদাস’ বারবার উঠে এসেছে রূপালি পর্দায়, তবে সঞ্জয় লীলা বনশালির নির্মিত ২০০২ সালের ‘দেবদাস’ আজও আলাদা জায়গা করে নিয়েছে দর্শকের মনে। ছবির শেষ দৃশ্যে দেবদাসের মৃত্যু এবং পার্বতীর ব্যর্থ ছুটে আসার করুণ মুহূর্ত যতটা আবেগময়, ঠিক ততটাই নাটকীয় ছিল এই দৃশ্যের নেপথ্য প্রস্তুতিও।
জানলে অবাক হয়ে যাবেন, এই নির্দিষ্ট দৃশ্যে ঐশ্বরিয়ার যে লাল পাড়ের সাদা শাড়িটি দেখানো হয়েছিল, সেটি তৈরি করতে মাত্র এক রাত সময় পেয়েছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার।
সম্প্রতি নিউজ এইট্টিন এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে ফ্যাশন ডিজাইনার নীতা লুল্লা সঞ্জয় লীলা বনশালীর দেবদাস ছবিতে কাজ করার একটি দারুণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি জানান, কীভাবে হঠাৎ ঐশ্বরিয়ার জন্য একটি লম্বা শাড়ি তৈরি করার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
নীতা বলেন, ‘ঐশ্বরিয়ার লুক তৈরি করার জন্য আমাকে শুধু একরাত দেওয়া হয়েছিল। শেষের যে দৃশ্যটি আপনি দেখেছিলেন সেই দৃশ্যে যে শাড়িটি ঐশ্বরিয়া পরেছিলেন, সেটি প্রায় ১২ থেকে ১৪ মিটার লম্বা একটি শাড়ি ছিল। একটি সুতির দুর্গা পূজার শাড়ি দরকার ছিল আমার। সবকিছু প্রস্তুত করে আগের দিন পরিচালককে আমি যখন দেখাই, তখন তিনি বলেন যে এই শাড়িটা যথেষ্ট লম্বা নয়।’
নীতা আরও বলেন, ‘সেই মুহূর্তে পরিচালকের মনে হয়েছিল যে ঐশ্বরিয়ার শাড়িতে যেহেতু আগুন লেগে যাবে, তাই শাড়িটা আরও বড় করা উচিত। ছোট শাড়ি হলে দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। পরের দিনে ছিল ওই শেষের দৃশ্যের শ্যুটিং। উপায় না পেয়ে রাত ১১ টায় একজন কাপড় বিক্রেতাকে ফোন করে দোকান খুলতে বলি। ২ – ৩ টি শাড়ি একসঙ্গে জুড়ে একটি লম্বা শাড়ি তৈরি করি।’
সবশেষে নীতা বলেন, ‘পরেরদিন ৮:৩০ মিনিট নাগাদ ওই শাড়িটা লাগতো পরিচালকের। সারারাত জেগে আমাদের দুটি ১৩ মিটার লম্বা শাড়ি তৈরি করতে হয়েছিল। এটা এমন একটা অভিজ্ঞতা ছিল যা চিরকাল আমার মনে থেকে যাবে।’
প্রসঙ্গত, সঞ্জয় লীলা বনশালি পরিচালিত ‘দেবদাস’ মুক্তি পাওয়ার পর বাণিজ্যিকভাবে ভীষণভাবে একটি সফল ছবি হিসেবে প্রমাণিত হয়। পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার জেতে এই ছবিটি। পুরস্কারে পুরস্কৃত হন এই সিনেমার কলাকুশলীরাও।