মেলবোর্ন, ১৮ মে— কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে প্রকাশ্য সমর্থন জানানোয় তুরস্কের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটি ইতোমধ্যেই তুরস্কের একাধিক ব্যবসা ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চলমান সহযোগিতা স্থগিত করেছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুরস্কে ভ্রমণ এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ভারতীয়রা। এছাড়া বিষয়টি এখন এক গুরুতর কূটনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে। তুরস্কভিত্তিক গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং কোম্পানি সেলেবির নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছে ভারত। এর ফলে দিল্লি ও মুম্বাইসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে সেলেবি।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী তার মতামত প্রকাশ করে এক্সে লেখেন, “জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।”
তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের প্রভাব পড়েছে শিক্ষা খাতেও। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াসহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে তুর্কি ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ তথ্য সামনে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরসহ অনেক রাজনীতিবিদ দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন কেউ ‘ভারতের শত্রুদের সাহায্যকারী দেশে কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় না করেন’।
মেইক মাই ট্রিপের তথ্য অনুযায়ী, তুরস্ক ও আজারবাইজানগামী বুকিং ৬০ শতাংশ কমেছে, আর বাতিলের হার বেড়েছে ২৫০ শতাংশ। এমনকি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় অনেক ভ্রমণ সংস্থা এসব গন্তব্য বাদ দিতে শুরু করেছে।
ভারতীয় পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালে তুরস্ক ভ্রমণকারী ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার জনের বেশি, যা দেশটির মোট বিদেশি পর্যটকের এক শতাংশেরও কম। তবে আজারবাইজানে ভারতীয় পর্যটক ছিল প্রায় নয় শতাংশ, ফলে দেশটির জন্য প্রভাব আরও বেশি হতে পারে।