মেলবোর্ন, ০৯ জুন— কর ও ব্যয় বিল নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। এতে টালমাটাল হয়ে উঠেছে মার্কিন রাজনীতি ও অর্থনীতি। তবে এই বিরোধের প্রভাবের বাইরে নেই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস ও স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (নাসা)। দুই ক্ষমতাধরের দ্বন্দ্বে বড় ধরনের ঝামেলায় পড়েছে সংস্থাটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কাছে তাদের বাজেট পেশ করেছে। তবে ইতোমধ্যে এই বরাদ্দ অর্ধেকের কাছাকাছি কমার কথা বলা হয়েছে। প্রায় ৪০টি বৈজ্ঞানিক প্রকল্প বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্প মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্সের সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছেন। এদিকে নাসা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কর্মী ও জিনিসপত্র পাঠানোর জন্য স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেট ব্যবহার করে।
চাঁদে ও পরে মঙ্গলগ্রহে নভোচারী পাঠানোর জন্য নিজেদের স্টারশিপ রকেট ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে স্পেসএক্স।
ওপেন ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. সিমন বারবার বলেন, “মানুষের মহাকাশ প্রকল্পে এ ধরনের অনিশ্চয়তা উদ্বেগ তৈরি করছে। মহাকাশ বিজ্ঞান ও অনুসন্ধান দীর্ঘ পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করে। একই সঙ্গে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।”
ট্রাম্প ও মাস্কের দ্বন্দ্ব ছাড়াও হোয়াইট হাউস থেকে নাসার বরাদ্দে বড় ধরনের কাটছাঁট উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। সংস্থাটির সব খাতেই খরচ কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। শুধুমাত্র মঙ্গলগ্রহে অভিযানের জন্য ১০ কোটি ডলারের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
প্ল্যানেটারি সোসাইটির মহাকাশ নীতির প্রধান কেসি ড্রায়ারের মতে, বাজেটে সম্ভাব্য কাটছাঁট যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সংকটের দিকে ইঙ্গিত করছে।
ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিশ্লেষক এডাম বেকারে মনে করেন, কংগ্রেসে নাসার বাজেটটি পাস হলে, সেটি সংস্থাটির মনোযোগ মৌলিকভাবে ঘুরিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাসার উদ্দেশ্য দুইভাবে ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রথমত, তিনি চীনের আগে চাঁদে মহাকাশচারীদের পাঠাতে চান। দ্বিতীয়ত, ট্রাম্প সবার আগে মঙ্গলগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা বসাতে চান। এর বাইরে সবকিছুই গৌণ।”
ড. বারবারের মতে, ৪০টি প্রকল্প বন্ধ হলে অন্য গ্রহ নিয়ে অনুসন্ধান ও মহাকাশ থেকে পৃথিবীর জলবায়ু সংকটের পর্যবেক্ষণের কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তার কাছে এটিই সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়।