মেলবোর্ন ১২ জুন
অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল যখন ঐতিহাসিক লর্ডসে ‘টেস্ট বিশ্বকাপ’ বা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ব্যস্ত, তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রীলঙ্কা সফরের। গলে ও কলম্বোতে দুই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ২০২৫-২৭ চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যাত্রা শুরু করবে।
বাংলাদেশ কি কখনো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে পারবে? এরকম বড় মঞ্চে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস কিংবা মুমিনুলররা কি যেতে পারবেন? টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে পা দেওয়ার আগে সেই প্রশ্নটাই গেল বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কোর্টে।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক এখনই অত বড় স্বপ্ন দেখছেন না বলেই জানালেন। নিজেদের সামর্থ্য এবং পারিপার্শ্বিক সব কিছু বিবেচনায় এনে অধিনায়ক মনে করছেন, ধীরে ধীরে এগোনোই ভালো।
তার ভাষ্য, ‘‘এটা (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল) তো অনেক বড় স্বপ্ন। এত দূরে যদি আমি এখনই চিন্তা করি তাহলে আসলে বোকামি হবে আমার কাছে মনে হয়।
শেষ চক্রে বাংলাদেশ ১২ ম্যাচে মাত্র ৪টিতে জিতেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল। এছাড়া নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল। এর আগের চক্রে সমান ম্যাচে মাত্র এক জয় এবং তারও আগের চক্রে সাত ম্যাচে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের।
অধিনায়ক এই বাস্তবতাকেই সামনে এনে ছোট ছোট কদমে এগিয়ে যেতে চান, ‘‘ছোট ছোটভাবে যদি আমরা এগোতে পারি তাহলে খুব ভালো। কারণ, আপনি যদি দেখেন আমরা যখন শুরু করেছিলাম, এর আগের সার্কেলে মাত্র একটা ম্যাচ জিতেছিলাম। গত সার্কেলে আমরা চারটি ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। টার্গেট থাকবে যে, এবার আরও দুইটা তিনটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি। আমরা যদি এভাবে ছোট ছোট চিন্তা করে এগোতে পারি তাহলে কেন না? বাংলাদেশ দলও একদিন ফাইনাল খেলবে। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সামনের দুই বছরের মধ্যে গত বছরের থেকে কিভাবে ভালো রেজাল্ট করছি আমরা।
উন্নতির জন্য ঘরের মাঠে জেতার বিকল্প নেই। শেষ চক্রে যে চারটি জয় ছিল, বাংলাদেশের তিনটিই দেশের বাইরে। নিউজিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে হারিয়ে শুরু। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট জয় এবং সবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে জয়। অথচ ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ভারতের মাটিতে গিয়ে হয়েছে নাস্তানাবুদ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও দেশের মাটিতে হেরেছে।
ঘরের মাঠে জয়ের বিকল্প নেই জানিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় আমাদেরকে ঘরের মাঠে জিততে হবে। আমরা শেষ সার্কেলের ঘরের মাঠে খুবই বাজে ক্রিকেট খেলেছি। যদি ঘরের মাঠে জিততে পারতাম, তাহলে আমরা হয়তো আরও দুই-তিনটি ম্যাচ বেশি জিততে পারতাম। চিন্তা তো ওখানেই যে ঘরের মাঠে আমরা কিভাবে টেস্ট জিততে পারি। যখন ম্যাচ হবে তখন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে খেলতে হবে। বাইরে ভালো হয়েছে—এই আত্মবিশ্বাসটা আমাদের কাজে দেবে। আমরা যদি এই বছর বাইরের মাটিতে রেজাল্ট করতে পারি তাহলে দেখা যাবে আমাদের এই বছরের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সার্কেলে আরও ভালো রেজাল্ট হবে।