মেলবোর্ন ১৬ জুন
আগের দুই ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর এবার দেখা গেল বাউন্ডারি বৃষ্টি। তাতে রান উৎসব দেখার সুযোগ পেলেন দর্শকরা। বিনোদনদায়ী ক্রিকেট খেলে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ম্যাচ ও সিরিজ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ব্রেডিতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬২ রানে জিতেছে শেই হোপের দল। ২৫৭ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়ে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে ১৯৪ রানে থামিয়েছে তারা।
টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ এনে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান ওপেনার এভিন লুইসের। ৪৪ বলে আট ছক্কা ও সাত চারে তিনি করেন ৯১ রান।
সফরকারীদের ইনিংসে ২০ ওভারে এসেছে ২০টি করে ছক্কা ও চার। টি-টোয়েন্টিতে তাদের কোনো ইনিংসে এর চেয়ে বেশি ছক্কা আছে কেবল একবার।
বাউন্ডারি থেকে দলটি করেছে দুইশ রান। এই সংস্করণে প্রথমবার দলটি দুইশ রান করতে পারল কেবল চার ও ছয় মেরে। অন্যদিকে, আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে ১১ ছক্কার সঙ্গে আছে ১৪টি চার।
বৃষ্টির জন্য প্রথম দুই ম্যাচে কোনো বল গড়ায়নি মাঠে। এদিন টস জিতে ফিল্ডিং নেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। তবে এর যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারেননি বোলাররা।
স্বাগতিকদের ভীষণ ভুগিয়ে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেন দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার হোপ ও লুইস। শুরু থেকেই বোলারদের ওপর চড়াও হন তারা। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে দল ও জুটির রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে আসে ৭০ রান।
২৯ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন লুইস, ৫২ বলে আসে জুটির একশ। ২৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেরেন হোপ। একাদশ ওভারে ভাঙে ১২২ রানের উদ্বোধনী জুটি।
২৭ বলে চারটি করে ছক্কা ও চারে ৫১ রান করেন হোপ।
বেশিক্ষণ টেকেননি রভম্যান পাওয়েল। সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ৯১ রানে থামেন লুইস। দুই জনকেই বিদায় করেন ম্যাথু হাসফ্রেজ। ব্যাটসম্যানের তাণ্ডবের ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে তিনি নেন ২ উইকেট।
তিনটি চার মেরেই থেমে যান শিমরন হেটমায়ার। ২২ বলে চারটি করে ছক্কা ও চারে অপরাজিত ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে আড়াইশ রানে নিয়ে যান অভিষিক্ত কেসি কার্টি। তিন ছক্কায় ৬ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন রোমারিও শেফার্ড।
ঝড় বয়ে যায় লিয়াম ম্যাককার্থির উপর দিয়ে। অভিষেকে এই পেসার ৪ ওভারে দেন ৮১ রান, টি-টোয়েন্টিতে যা আয়ারল্যান্ডের কোনো বোলারের সবচেয়ে খরুচে বোলিং। এই সংস্করণে সব দেশ মিলিয়ে এর চেয়ে খরুচে বোলিং আছে কেবল একটি।
রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডের কেউ পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি। কিন্তু সবার মিলিত অবদানে দুইশ রানের কাছাকাছি যায় দলটি।
প্রথম ওভারে তিন চার মেরে পরের ওভারের প্রথম বলে ফেরেন অধিনায়ক পল স্টার্লিং। দ্বিতীয় উইকেটে আয়ারল্যান্ডের প্রথম শতরানের জুটি উপহার দেন ক্যারি টেক্টর ও রস অ্যাডায়ার।
২৫ বলে ৩৮ রান করা অ্যাডায়ারকে এলবিডব্লিউ করে ১০১ রানের জুটি ভাঙেন রোস্টন চেইস। পরের ওভারে চার বলের মধ্যে লর্কান টাকার ও রস অ্যাডায়ারকে (৩৬ বলে ৪৮) বিদায় করেন আকিল হোসেন।
একাদশ ও দ্বাদশ ওভার মিলিয়ে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। শেষ দিকে চার ছক্কায় ১৪ বলে অপরাজিত ৩১ রানে পরাজয়ের ব্যবধান কমান মার্ক অ্যাডায়ার।
২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফলতম বোলার আকিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২৫৬/৫ (লুইস ৯১, হোপ ৫১, পাওয়েল ২, হেটমায়ার ১৫, কার্টি ৪৯, হোল্ডার ১৮, শেফার্ড ১৯; হামফ্রেজ ৪-০-১৬-২, মার্ক অ্যাডায়ার ৪-০৫২-১, ব্যারি ম্যাককার্থি ৪-০-৫৫-১, লিয়াম ম্যাককার্থি ৪-০-৮১-০, হোয়াইট ৪-০-৫০-০)
আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৪/৭ (স্টার্লিং ১৩, রস অ্যাডায়ার ৪৮, টেক্টর ৩৮, টাকার ১, টেক্টর ৭, ডকরেল ৭, মার্ক অ্যাডায়ার ৩১, ব্যারি ম্যাককার্থি ২, লিয়াম ম্যাককার্থি ১৬; আকিল ৪-০-২৭-৩, হোল্ডার ৪-০-৪৯-২, শেফার্ড ৩-০-২৩-১, জোসেফ ৪-০-৪৪-০, মোটি ৩-০-২৮-০, চেইস ২-০-১৬-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬২ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: এভিন লুইস