মেলবোর্ন, ০৫ জুন— ১৭ বছর বয়সী ফিওবি বিশপের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার রুমমেট জেমস উড শেষ মুহূর্তে কী ঘটেছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ১৫ মে সকালে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময় ফিওবির সঙ্গে একাধিক তীব্র ঝগড়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তিনি।
বুধবার সকালে কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জেমস উডকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখন আর ফিজিক্যাল অনুসন্ধান চালাচ্ছে না। ১৫ মে সকালে জিন জিন এলাকার তানিকা ব্রোমলি ও জেমস উড ছিলেন ফিওবিকে সর্বশেষ দেখার ব্যক্তি। ফিওবিকে তানিকার ধূসর রঙের হুন্ডাই গাড়িতে বান্ডাবার্গ বিমানবন্দরের দিকে যেতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছিল, সে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় তার স্কুলবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিশ্চিত যে ফিওবি কখনোই বিমানবন্দরে পৌঁছায়নি। তার রুমমেটদের এই দাবির সত্যতা মেলেনি। তদন্তের কেন্দ্রে রয়েছে ফিওবির বসবাসের জিন জিনের সেই বাড়ি এবং সেই গাড়ি।
জানা গেছে, বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় ফিওবি ফোনে তার প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলছিল। ওই প্রেমিক দাবি করেন, ফোনে তারা ফিওবির ওপর চিৎকার করছিলেন, যার ফলে ফিওবির কথা পরিষ্কার শোনা যাচ্ছিল না।
জেমস উড ডেইলি মেইল-কে জানান, ফিওবি খুব উত্তেজিত ছিল। সে তার প্রেমিকের সামনে ভালোভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে চাচ্ছিল। “সে মাঝে মাঝে এমন হয়। সাধারণত আমরা শান্ত করতে পারি, কিন্তু ওইদিন সে ক্রমাগত উত্তেজিত হচ্ছিল এবং একটা টিভি ভেঙে ফেলে,” বলেন উড।
“সে রাগী হলেও খারাপ মেয়ে নয়। খুব ভালো মেয়ে, ভদ্র ও বুদ্ধিমান। ও আমাদের সঙ্গে থাকত কারণ সে আর নিজের বাড়িতে থাকতে পারত না।”
সকালবেলা ঝগড়ার মধ্যে তিনজন রওনা দেয় বিমানবন্দরের উদ্দেশে। ফিওবি ছিল পেছনের সিটে এবং সঙ্গে ছিল বিশাল এক ডাফেল ব্যাগ—যা তার শরীরের সমান বলেও বর্ণনা করেছেন উড। সেই ব্যাগটিও এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রাস্তায় কিছুটা যাওয়ার পর ফিওবির মন শান্ত না হওয়ায় উড তানিকাকে গাড়ি থামাতে বলেন, যাতে ফিওবিকে কিছুটা সময় দেওয়া যায়। সেখানেই শেষবার ফিওবিকে জীবিত দেখা গিয়েছিল।
‘ফিরে এসে দেখি ফিওবি আর নেই’
উড বলেন, “আমরা হাঁটতে গিয়েছিলাম, হয়তো তিন, পাঁচ বা আট মিনিট, ঠিক মনে নেই, কিন্তু ফিরে এসে দেখি ফিওবি ও তার ব্যাগ উধাও।”
তারা এরপর আবার বিমানবন্দরের দিকে যায় ফিওবিকে খুঁজতে, কিন্তু কোথাও দেখা মেলেনি। উড দাবি করেন, তারা গাড়ি চালিয়ে সেই সমস্ত জায়গায় খুঁজেছেন, যেখানে ধারণা করা যায় ফিওবি যেতে পারে। পরবর্তীতে তাদের গাড়িকে Good Night Scrub National Park-এর দিকে যেতে দেখা যায়, যা সিসিটিভিতে ধরা পড়ে।
তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনও সরাসরি অভিযোগ আনা হয়নি এবং Sky News তাদের ফিওবির নিখোঁজে জড়িত বলেও কোনও দাবি করেনি।
মায়ের আকুতি
ফিওবির মায়ে কাইলি জনসন সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত পোস্ট করে যাচ্ছেন তার মেয়েকে ফিরে পাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে। বুধবার সকালে তিনি ফেসবুকে লেখেন,
“২০তম দিন শুরু করলাম, এখনও তুমি নিখোঁজ, ফিওবি। জানি না আর কোনওদিন জীবন আগের মতো হবে কিনা। তবে এটা জানি, কেউ কেউ জানে তুমি কোথায় আছো, দয়া করে পুলিশকে বলো।”