লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বিমান হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় দাহিয়ায় এই হামলায় অন্তত ৩ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। এই হামলা হিজবুল্লাহ’র সাথে চার মাস আগে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনও পূর্বসংকেত ছাড়াই এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহ’র এক সদস্যকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যিনি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসকে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলা পরিকল্পনায় সহায়তা করছিলেন।
এই হামলার পর হিজবুল্লাহ’র পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
হামলার পরের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দাহিয়ার আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে এবং একটি অ্যাপার্টমেন্টের তিনটি তলা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসাবশেষ নিচে পার্ক করা গাড়িগুলো চাপা পড়েছে। আল জাজিরার সংবাদদাতা রেসুল সারদার জানান, দাহিয়ায় উদ্ধারকার্য চলছে এবং হামলায় নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এই হামলা লেবানন সরকারের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ গত নভেম্বরে হিজবুল্লাহ’র সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই প্রথম শুক্রবার ইসরায়েল বৈরুতে হামলা চালায়। ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তায় সম্পাদিত এই চুক্তির মাধ্যমে এক বছরের সংঘাতের অবসান হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের লিতানি নদী ও জাতিসংঘের নীল রেখা সীমান্তের বাইরে সরে যাওয়া এবং লেবাননি সেনাদের মোতায়েন করার কথা ছিল। তবে উভয় পক্ষই একে অপরকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
ইসরায়েল জানুয়ারিতে প্রতিশ্রুত সেনা প্রত্যাহার বিলম্বিত করেছে এবং দক্ষিণ লেবাননের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি এলাকা দখল করে রেখেছে। পাশাপাশি তারা প্রায় প্রতিদিন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও অস্ত্র লক্ষ্য করে হামলা করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লেবানন ও ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কূটনৈতিক মহল।
সূত্র : আলজাজিরা