অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ১০টি চাইল্ডকেয়ার সেন্টারের মধ্যে একটিও জাতীয় মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে না, যার ফলে হাজার হাজার শিশু নিম্নমানের যত্নের মধ্যে রয়েছে বলে সম্প্রতি এবিসি ইনভেস্টিগেশনসের একটি তদন্তে প্রকাশিত হয়েছে।
চাইল্ডকেয়ার সেন্টার গুলোতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং চাইল্ডকেয়ার কর্মীর ঘাটতির কারণে অনেক সেন্টার কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সেন্টারগুলোতে অযোগ্য কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে এবং যত্নের মান কমে যাচ্ছে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
চাইল্ডকেয়ার সেন্টারগুলো গড়ে প্রতি চার বছর পর পর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়, কিন্তু কিছু সেন্টার এই মূল্যায়ন সিস্টেমকে ফাঁকি দিচ্ছে। ফলে অভিভাবকরা নিশ্চিত হতে পারছেন না, তাদের সন্তানের সেন্টারটি কতটুকু মানদণ্ড পূরণ করছে বা চাইল্ডকেয়ার সেন্টারগুলোর কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ আছে কিনা।
চাইল্ডকেয়ার সেন্টারগুলোর সাধারণত “মানদণ্ড অতিক্রম করা (Exceeding the standard)” “মানদণ্ড পূরণ করা (Meeting the criteria)”, “মানদণ্ড পূরণের জন্য কাজ করা (Working to meet standards)” এবং “উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রয়োজন (Significant improvement needed)” এইভাবে রেটিং হয়ে থাকে। তবে ১০% সেন্টারের কোনো রেটিং নেই, যার বেশিরভাগই লাভজনক প্রতিষ্ঠান।
একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, 3 বিয়ার্স চাইল্ডকেয়ার সেন্টার, যা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। এই সেন্টারটির বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ আছে। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত শিশু ভর্তি, পরিদর্শন এড়াতে শিশুদের অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়া।
এমনও অভিযোগ রয়েছে যে কর্তৃপক্ষকে এড়াতে শিশুদের তিন ঘন্টা ধরে পানিবিহীন একটি ভ্যানে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও, কিছু সেন্টার রেটিং পদ্ধতিকে ফাঁকি দিচ্ছে। যেমন, মূল্যায়ন এবং রেটিং সময়ের জন্য শুধুমাত্র স্টাফ রুমে প্রয়োজনীয় উপকরণ রাখা এবং মূল্যায়নকারীদের আসার সময় নতুন আসবাবপত্র কেনা।
চাইল্ডকেয়ার কর্মীরা অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন বেতনভোগী পেশাগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিছু কিছু সেন্টার জাল যোগ্যতার সার্টিফিকেট নিয়ে কর্মী নিয়োগ করেছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
একজন প্রাক্তন চাইল্ডকেয়ার সেন্টার ম্যানেজার এবিসির ফোর কর্নার্সকে বলেছেন, তিনি জানেন যারা জাল যোগ্যতার সার্টিফিকেটের জন্য কেউ কেউ $৬,০০০ ডলার ফি দিয়েছেন।
জাতীয় বৃত্তিমূলক নিয়ন্ত্রক অস্ট্রেলিয়ান স্কিলস কোয়ালিটি অথোরিটি (Australian Skills Quality Authority (ASQA)) সম্ভাব্য জাল চাইল্ডকেয়ার যোগ্যতা এবং জালিয়াতির জন্য বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
মার্ক গ্লাজব্রুক ২৭ বছর ধরে একটি ইমিগ্রেশন এজেন্সি চালাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, চাইল্ড কেয়ার ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় পাথওয়ে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের শেষের দিকে ভিসায় পরিবর্তনের পরে এটি আরো জনপ্রিয়তা পায়। “অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল গভরমেন্টের বেশ কয়েকটি ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম, অস্থায়ী ভিসা, স্থায়ী ভিসা রয়েছে, যার যোগ্য পেশার তালিকা রয়েছে। শুধুমাত্র সেই তালিকায় থাকা পেশাগুলিই সেই মাইগ্রেশন প্রোগ্রামগুলিতে অ্যাক্সেস করার যোগ্য। ঠিক ক্রিসমাসের আগে, ফেডারেল গভরমেন্ট চাইল্ড কেয়ারকে অস্থায়ী এবং স্থায়ী নিয়োগকর্তা-স্পনসর ভিসা প্রোগ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই যুক্ত করেছে,” তিনি বলেছেন।