বিশ্ব অর্থনৈতিক ধসের প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ানদের সুপার ব্যালেন্স নিয়ে উদ্বেগ
আজ সকালে প্রায় সব অস্ট্রেলিয়ান তাদের সুপার অ্যানুয়েশন ব্যালেন্সের নিয়ে উদ্বেগে থাকবেন— গতরাতে বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের বিপর্যয়কর লেনদেনের পর শুক্রবার রাতের বাণিজ্যে ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ারবাজার ৬ শতাংশ পড়ে যায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ৫০০টি কোম্পানির শেয়ারমূল্যে মাত্র দুই দিনে ১১ শতাংশ হ্রাস ঘটিয়েছে। এটি মহামারির সময়কার পর সবচেয়ে বড় পতন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ান শেয়ারবাজারে ৪.২৯ শতাংশ পতনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ডলার রাতারাতি ধসে পড়েছে, প্রায় ৬০ মার্কিন সেন্টের নিচে নেমে গেছে — যা গত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন অবস্থানে।

চীনের প্রতিক্রিয়া, ট্রেড ওয়ার আরও তীব্র
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির প্রতিক্রিয়ায় চীন পাল্টা ট্যারিফ এবং বাণিজ্য-অপ্রতিবন্ধক নীতি ঘোষণা করেছে। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে চীনকে কটাক্ষ করে বলেন, “শুধু দুর্বলরাই ব্যর্থ হয়” এবং এটি “ধনী হবার সেরা সময়”।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১০ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর বিদ্যমান ট্যাক্সের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করা হবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, তারা সাতটি রেয়ার আর্থ উপাদানের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্যাডোলিনিয়াম ও ইট্রিয়াম — যা চিকিৎসা ও ইলেকট্রনিকস শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
চীন এই পদক্ষেপকে “একতরফা দাদাগিরি” হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (WTO) মামলা করার ঘোষণা দিয়েছে।
বাজারে আতঙ্ক, শেয়ার বিক্রি বাড়ছে
Cresset Capital-এর জ্যাক অ্যাবলিন বলেন, “আমরা কার্যত একটি উত্তেজনাপূর্ণ বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে পড়েছি। যদি এই ট্যারিফগুলো বহাল থাকে, তাহলে এটা একটি বৈশ্বিক মন্দার সূচনা।”
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ার জেরোম পাওয়েল সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের ট্যারিফ উচ্চ বেকারত্ব এবং মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধীর করবে।
অস্ট্রেলিয়ায় সুদের হার চারবার কমার সম্ভাবনা
অস্ট্রেলিয়ার বাজারে এখন আশা করা হচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাংক (RBA) আগামী মে মাসে সুদের হার কমাবে এবং সম্ভবত আরও তিনবার তা কমানো হবে।
AMP-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ শেন অলিভার বলেন, “এই নতুন ট্যারিফ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরও বড় হুমকি তৈরি করছে এবং অস্ট্রেলিয়ান অর্থনীতির জন্য এটি প্রবৃদ্ধি কমাতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমাদের পূর্বানুমান, এই বছর শেয়ারবাজার সর্বোচ্চ চূড়া থেকে ১৫ শতাংশের বেশি হ্রাস পাবে এবং অবশেষে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে বাধ্য হবে।”
এই সংকটে বিনিয়োগকারীরা আরও সতর্ক হয়ে উঠেছেন, এবং আগামী দিনগুলোতে বাজারের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।