মেলবোর্ন, ৩০ এপ্রিল— বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে প্রশ্ন করা এবং তার সঙ্গে সাংবাদিকদের বাহাস ঘিরে বেসরকারি টেলিভিশন দীপ্ত টিভির বুলেটিন বন্ধ এবং তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সচিবালয়ে সোমবারের ওই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার নিজেদের স্ক্রলে সংবাদ সম্প্রচার বন্ধের খবর দেয় দীপ্ত টিভি। দুপুর ২টার পর থেকে পাঁচটি বুলেটিন প্রচার করেনি স্টেশনটি। রাত ১১টায় আবার সংবাদে ফেরে তারা। একইসঙ্গে টেলিভিশনটির সিনিয়র ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট মিজানুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে
অন্যদিকে এটিএন বাংলা তাদের বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বীকে বরখাস্ত করেছে।
এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মনিউর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানান, সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নের জের ধরে তাদের টিভি চ্যানেল ঘেরাওয়ের হুমকি দেয়া হয়েছে। যে কারণে ওই প্রতিবেদককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া চ্যানেল আই অনলাইনের ফেইসবুক পেইজে এক পোস্টে সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে ‘পেশাদারিত্ব প্রদর্শন না করার অভিযোগের’ তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক অর্থাৎ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রফিকুল বাসারকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
দীপ্ত টিভি ও এটিএন বাংলায় কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি বাংলা জানতে পেরেছে যে, সোমবার সচিবালয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টার একটি সংবাদ সম্মেলনে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের দুই রিপোর্টারের প্রশ্ন ঘিরেই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর একইদিন সন্ধ্যায় সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম বন্ধ করেনি। এটি দীপ্ত টিভি-কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকী সেদিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমি বা আমার মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে একদমই ওয়াকিবহাল না। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোই আসলে বলতে পারবে তাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ কী”।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৮তম আসরে ‘আলী’ নামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের যাওয়া উপলক্ষে সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এবং ওই চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের বক্তব্যের পর প্রশ্নোত্তর পর্বে নানা বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
সেখানে সাংবাদিকদের থেকে প্রশ্ন আসে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে আয়োজিত বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার ইউনেস্কো স্বীকৃতি, শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখাকৃতির আদলে মুখোশ এবং জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানের নিহতের সংখ্যা নিয়ে।
পাল্টাপাল্টি কথায় প্রশ্নোত্তরের এই পর্ব অনেকটা বাহাসে পরিণত হয়। শুরুতে বসে উত্তর দিলেও এক পর্যায়ে দাঁড়িয়েও কথা বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
বিষয়টি চাউর হলে ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্ন ঘিরে ওই তিন টেলিভিশন সাংবাদিকের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের ছবিসহ পোস্ট করা হয় ‘জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স-জেআরএ’ নামে একটি ফেইসবুক পেইজে।
তিন সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে করা ওই পোস্টে বলা হয়, “আজকের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রেস কনফারেন্স এ যারা ফ্যাসিস্ট এর পক্ষে কথা বলেছে…”
মঙ্গলবার দুপুরে ওই পেইজ থেকে আরেকটি পোস্ট করে বলা হয়, “এই তিন সাংবাদিক এর বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ‘মার্চ টু দীপ্ত টিভি, চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা‘।”
এর মধ্যে দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম বন্ধ এবং তিন সাংবাদিকে বরখাস্ত বা অব্যাহতি দেওয়ার খবর আসে। জেআরএ এর ফেইসবুক পেইজেও বরখাস্ত বা অব্যাহতির চিঠি প্রকাশ করা হয়।
কী হয়েছিল সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে?
সোমবার সচিবালয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশি শর্টফিল্ম ‘আলী’র প্রদর্শনীর আমন্ত্রণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অংশ নেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত একাধিক সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে জানান, সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার কাছে সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে প্রশ্ন করেন।
সেখানে এক পর্যায়ে চ্যানেল চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক রফিকুল বাসার পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মোটিফ প্রসঙ্গ তুলে সংস্কৃতি উপদেষ্টার কাছে জানতে চান, চারুকলায় পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মোটিফ প্রদর্শন করার বিষয়টি কি ঠিক হয়েছে? নাকি এতে সমস্যা আরো দীর্ঘায়িত হলো কি না এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
তখন পাল্টা প্রশ্ন করে সাংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “এবার নববর্ষের থিম কী ছিল”?
তখন আরেক সাংবাদিক উত্তর দেন, নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান।
তখন সাংবাদিক মি. বাসার পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমরা কি সুন্দর জায়গাতে গেলাম নাকি আরো অসুন্দরকে আরো দীর্ঘায়িত করলাম? আপনার ব্যক্তিগত মতামত কী?”
জবাবে উপদেষ্টা মি. ফারুকী বলেন, “মোটিফ কী ব্যবহার করবে এটা চারুকলা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত। আমি সাধারণ নাগরিক হিসেবে বলছি। সেটা হচ্ছে, এই যে আপনি ফ্যাসিবাদের… দেখুন, যখন আমরা জাতীয় ঐক্যের কথা বলি, তখন জাতীয় ঐক্যের কথার মধ্যে কি আমরা, ধরেন, যে মানুষ ১৪শ মানুষ খুন করেছেন জুলাইতে, তার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে, তার বিচার, অনুশোচনা, ক্ষমা কোনো কিছুই ঘটেনি, আপনি কি আমাকে বলছেন তার সঙ্গে এখন জাতীয় ঐক্য করবার জন্য? আই থিংক দিস ইজ অ্যাবসার্ড।”
বাসার আবার জানতে চান, ‘এটা নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আমি বলেছি যে, সেই সমস্যাটা কি জিইয়ে থাকল, না কি সমাধান হল?”
তখন উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, ”বিচার… প্রথম কথা হচ্ছে, আমার যেটা উত্তর দেওয়ার, পরিষ্কার করে দিয়েছি। ১৪শ মানুষ যারা খুন করেছে, তাদের বিচারপ্রক্রিয়ায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত, বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত, ইউ ক্যাননট এক্সপেক্ট, এ কাইন্ড অব রিকনসিলিয়েশন প্রসেস টু স্টার্ট। দ্যাট ইজ এ ভেরি সিম্পল থিং। পৃথিবীর কোথাও এটা ঘটে না। এটা হচ্ছে, সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার উপলব্ধি। রিগার্ডিং দ্য মোটিফ, দ্যাটস নট মাই জব। এটা হচ্ছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা কী করবে।”
এই সময় এটিএন বাংলার সাংবাদিক ফজলে রাব্বী জানতে চান, ”আপনি যে ১৪শ মানুষ নিহতের… অবশ্যই যখন এই ১৪শ সংখ্যাটাতো আর একটা, আপনার কাছ থেকে, যারা পলিটিক্যাল রেটরিক বলছে, তারা ১৪শ বলবে…”
উত্তরে ফারুকী বলেন,. ”আই এম টকিং অ্যাবাউট ইউনাইটেড নেশনস রিপোর্ট। ভাই, প্লিজ ডু সাম রিসার্চ। প্লিজ ডু ইউর ওন রিসার্চ। চেক।
এক পর্যায়ে দীপ্ত টিভির রিপোর্টার মিজানুর রহমান উপদেষ্টা মি. ফারুকীর কাছে প্রশ্ন করেন, “জুলাই আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ১৪০০ আপনি কীভাবে বলেন? এটাতো কোর্ট বলবে, কোর্ট ভারডিক্ট করবে। আপনি একটা বায়াসড উত্তর কীভাবে দেন।”
জবাবে উপদেষ্টা পাল্টা প্রশ্ন করেন, “৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরে আপনার মতো একজন সাংবাদিক যদি এসে বলতেন, কী করে আপনি বলছেন এত লোককে পাকিস্তানিরা মেরেছে। কোর্ট তো ভার্ডিক্ট দেয়নি এখনো। দিস এই অ্যাবসার্ড। ডোন্ট সে দিস”।
এ নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে ফজলে রাব্বী জানতে চান, ”এই প্রশ্নে আমরা ৭১ নিয়ে আসছি, এটার সাথে একাত্তরের কী সম্পর্ক?”
তখন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ”দেয়ার ইজ এ রিজন, দেয়ার ইজ এ রিজন, শেষ করি। আপনি যেমন এখন প্রশ্ন করছেন, ১৯৭২ সালে এই রকম একটা প্রেস মিটে একজন সাংবাদিক যদি বসে এই প্রশ্নটা করতেন- যেমন- ওই সময়ে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিমন্ত্রী যিনি ছিলেন, আমি জানি না কে ছিলেন, উনাকে যদি প্রশ্ন করতেন, আচ্ছা এই যে আপনারা যে বারবার বলছেন, খুনি পাকিস্তানি, খুনি পাকিস্তানি, এটাতো এখন কোর্ট প্রমাণ করেনি, কেন বলছেন খুনি পাকিস্তানি? এই প্রশ্নটা কেমন দেখাবে?”
সংবাদ সম্মেলনে আরও দুয়েকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন।
সেখানে অভিনেতা ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় মামলা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। সেসবের জবাব দেন উপদেষ্টা।
যা বলছে তিন টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ
সংবাদ সম্প্রচার বন্ধের কারণ জানতে চাইলে দীপ্ত টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক এসএম আকাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অভ্যন্তরীণ কারণে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আপাতত নিউজ অপারেশন বন্ধ রেখেছে।”
সিনিয়র ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট মিজানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে প্রশ্নের কারণে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “চিঠিতে ওই রকম কিছু বলা হয়নি।”
ফজলে রাব্বীকে বরখাস্তের চিঠিতে তার বিরুদ্ধে অতীতে অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপের কথা বলেছে এটিএন বাংলা কর্তৃপক্ষ।
তবে টেলিভিশন স্টেশনটির প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মনিউর রহমান বলেন, সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করাকে ঘিরে জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স নামে একটি ফেইসবুক পেইজে অভিযোগ করা হয়।
“ব্যবস্থা না নিলে আগামীকাল অফিসের দিকে মার্চ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বীকে পাঠানো বরখাস্তের চিঠিতে বলা হয়, “অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপের জন্য গত ০৫/০৬/২০১৬ ইং ও ০৭/১১/২০২২ ইং তারিখে সতর্কীকরণ এবং পরবর্তীতে গত ১৯/১০/২০২৩ ইং ও ২৯/০৮/২০২৪ ইং তারিখে পরপর দুইবার আপনাকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
“আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক কারণে বিশেষ বিবেচনায় চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। এর পরেও আপনি রিপোটিং এর ক্ষেত্রে যথাযথ পেশাগত দায়িত্ব পালন না করায় আপনাকে ২৯/০৪/২০২৫ইং তারিখ থেকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হলো।”
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রফিকুল বাসারকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে চ্যানেল আইয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর আরেফিন ফয়সাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটা অভিযোগ উঠেছে, সেটা আমরা তদন্ত করব। আর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এটা একটা অফিসিয়াল প্রসেস।”
যা বললেন ফারুকী
সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘বাহাস’ নিয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ফেইজবুক পেইজে একটি পোস্ট দেন ফারুকী। সেখানে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করার ‘সুক্ষ্ম চেষ্টার’ অভিযোগ তোলেন তিনি। কথা বলেন তিন সাংবাদিকের চাকরি যাওয়া নিয়েও।
ফারুকী বলেন, “ম্যাস মার্ডার ডিনায়ালের একটা সুক্ষ্ম চেষ্টা থেকে কালকের (সোমবার) প্রেস কনফারেন্সে যে কথাগুলা বলেছেন তিনজন সাংবাদিক, সেই কথাগুলা জুলাই দেখেছে এমন যেকোনো সেনসেটিভ মানুষকেই আহত করতে পারে। যে মা তার সন্তান হারিয়েছে মাত্র আট মাস আগে, যে সন্তান খুনির গুলিতে আহত হয়েছে, যে বোন, যে ভাই শহীদ হওয়ার হাত থেকে বেঁচে এসেছে, তাদের বুকে শেলের মতো বিঁধেছে সাংবাদিক তিনজনের কথা।
“ঘটনা থেকে মাত্র আট মাস দূরে দাঁড়িয়ে আমরা, খুনির বিচার হয় নাই এখনো। পশ্চিমে বিচার হওয়ার পরেও এখনো হলোকাস্ট ডিনায়াল মানুষের বুকে লাগে। আর কালকে যখন প্রশ্ন করা হলো, একজন খুনিকে খুনি বলা যাবে কিনা- এই প্রশ্ন জনতার জুলাইকেই বেমালুম নাই করে দেওয়ার একটা চেষ্টা হিসেবেই দেখেছে সবাই। প্রেস কনফারেন্সে তাদের কথাগুলা আমাকে বিস্মিত করলেও ধৈর্য নিয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”
উপদেষ্টা লেখেন, “তারপর মানুষ তাদের ক্ষোভ জানিয়েছে। এবং আজ সন্ধ্যায় জানলাম চ্যানেলগুলা তাদের চাকরিচ্যুত করেছে। প্রত্যেক চ্যানেলেরই নিজস্ব এডিটোরিয়াল পলিসি থাকে। তারা সেই পলিসির আলোকে কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা তাদের ব্যাপার।
“তারপরও অনলাইনে কাউকে কাউকে একটা কথা বলার চেষ্টা করতে দেখছি যে আমাকে প্রশ্ন করায় চাকরি গেছে তাদের। হাস্যকর কথা। বিষয়টা যে আমি না, বিষয়টা যে জুলাই এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পলিসির ব্যাপার- এটাও তারা বুঝতে পারছে না।”
তিনি বলেন, “ সবার উদ্দেশ্যে ফর দ্য রেকর্ড বলে রাখছি, তাদের চাকরির ব্যাপারে আমাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নাই। এ বিষয়ে সংশয় থাকলে ওই চ্যানেলগুলার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই সবাই সত্য জানতে পারবেন। অনুমানে দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলানোই ভালো।”