মেলবোর্ন, ২৪ মে— ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে গ্রামবাসীরা হত্যা করে খণ্ডবিখণ্ড করেছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের এক কর্মকর্তা।
গোলাঘাট জেলার একটি গ্রামে বসবাসকারী মানুষজন ক্ষুব্ধ হয়ে বাঘটিকে হত্যা করে। স্থানীয়দের দাবি, বাঘটি গবাদিপশু হত্যা করছিল এবং তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এই ঘটনায় আসাম রাজ্যের বন বিভাগ একটি মামলা করেছে। আসামে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এটি চলতি বছরে রিপোর্ট হওয়া তৃতীয় বাঘ হত্যার ঘটনা।
শীর্ষ বন কর্মকর্তা গুণদীপ দাস টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকাকে জানান, বাঘটি গুলিতে নয়, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাঘটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
দাস আরও জানান, প্রায় এক হাজার মানুষ বাঘটি মারতে জড়ো হয়েছিল এবং অনেকে দা-ছুরি নিয়ে বাঘটির ওপর আক্রমণ চালায়। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আসামের বিধায়ক মৃণাল শইকিয়া এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে বাঘটির মুখ, চামড়া এবং পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কাটা। ভিডিওটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক একটি কাজ। পৃথিবী কেবল মানুষের নয়, প্রাণীদেরও। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরেক বন কর্মকর্তা সোনালী ঘোষ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বাঘটির উৎস স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে মারা গেছে।
আসাম বন বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সালে রাজ্যে বাঘের সংখ্যা ছিল মাত্র ৭০টি, যা ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১৯০-এ—বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কারণে এই বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।
তবে, বাসস্থান সংকোচন এবং বিভিন্ন অভয়ারণ্যের মধ্যে সংযোগকারী করিডোর না থাকায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে বাঘের দ্বন্দ্ব এবং হত্যার ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রায়শই উঠে আসে।
উল্লেখ্য, বাঘ ভারতের Wildlife Protection Act, 1972 অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণী, যার অধীনে বাঘ শিকার, পাচার বা শরীরের অংশের ব্যবসা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।