মেলবোর্ন, ০১ মে—সিডনির পূর্বাঞ্চলের ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই জাংশন শপিং সেন্টারে ১৩ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে ছুরি নিয়ে চালানো জোয়েল কাওচির হামলার আগে ও পরে ঠিক কী ঘটেছিল, তার বিস্ময়কর মুহূর্ত এখন সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। এই ফুটেজে দেখা যায় কিভাবে পুলিশ কর্মকর্তা, ইনস্পেক্টর অ্যামি স্কট একাই কাওচিকে গুলি করে হত্যা করেন এবং আরও বহু প্রাণ রক্ষা করেন।
৪০ বছর বয়সী জোয়েল কাওচি ছুরি হাতে চালানো ওই হামলায় ছয়জনকে হত্যা ও আরও ১০ জনকে আহত করেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন: ডন সিংগেলটন, ইক্সুয়ান চেং, ফারাজ আহমেদ তাহির, অ্যাশলি গুড, জেড ইয়ং এবং পিকরিয়া ডারচিয়া।
একাই দায়িত্ব পালন করা ইনস্পেক্টর অ্যামি স্কট তাঁর তাৎক্ষণিক সাহসিক সিদ্ধান্তে কাওচিকে গুলি করে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেন। তাঁর এই পদক্ষেপের ফলে বহু নিরীহ মানুষের প্রাণ রক্ষা পায়। অ্যামি স্কটকে ইতোমধ্যেই জাতীয় পর্যায়ে ‘হিরো কপ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
হামলার ঘটনা এবং কাওচির মানসিক অবস্থা নিয়ে আদালত তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে তার হামলার আগে ও ঘটনার দিন মনোভাব কেমন ছিল, কিংবা সে কি নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করেছিল—এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে।
চতুর্থ দিনে পুলিশের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রত্যক্ষদর্শী মিস্টার ডেসপ্রো বলেছেন, “আমি মনে করেছিলাম কাওচি আমাদের ওপর হামলা চালাতে যাচ্ছে। তার মুখে কোনও ভাব প্রকাশ ছিল না, হাতে ছিল বড় কালো ছুরিটি। প্রথমে সে স্বাভাবিক গতিতে আমাদের দিকে এগোয়, এক সেকেন্ড থেমে থেকে পরে আবার দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসে।”
অন্যদিকে, ঘটনার দিন বিশেষ অপারেশনে থাকা প্যারামেডিক ও পিপিই (PPE) ব্যবস্থাপনার কিছু ঘাটতির কথাও তদন্তে উঠে এসেছে। বিশেষ অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় বলিস্টিক ভেস্ট ও হেলমেট ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় কিছু প্যারামেডিকদের তাৎক্ষণিক অংশগ্রহণে সমস্যা হয়। তবে তদন্তে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, এই বিলম্বের কারণে কোন রোগীর সেবায় বা প্রাণহানির ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়েনি।
তদন্তে আরও জানানো হয়েছে, সেই দিন ১০ জন বিশেষ অপারেশন প্যারামেডিক ডিউটিতে থাকলেও কেবল দুইজন ছিলেন ট্যাকটিক্যাল ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত। প্রাকৃতিক আবহাওয়া ভালো থাকায় সেই সপ্তাহান্তে বেশি পার্কিং ও আউটডোর অ্যাক্টিভিটির সম্ভাবনা মাথায় রেখে কর্মী বণ্টন করা হয়েছিল।
এক প্যারামেডিক সাক্ষ্যে বলেন, “যদি আগে জানতে পারতাম, তাহলে পিপিই সংগ্রহের জন্য আরও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। সরঞ্জামগুলোর যেন সঠিক অবস্থানে এবং গাড়ির মধ্যেই মজুদ থাকে, সেটিই এখন ভবিষ্যতের জন্য বড় শিক্ষা।”
তদন্তে উঠে আসা নানা দিক, যেমন জরুরি পিপিই ব্যবস্থাপনা, বিশেষ প্যারামেডিকদের সংস্থান ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার গুরুত্ব, অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা কাঠামো আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করছে।