মেলবোর্ন, ১৩ জুন— অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রীরা জাতীয়ভাবে প্রজনন প্রযুক্তি খাতে একটি “দ্রুত পর্যালোচনা” চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার লক্ষ্য একটি স্বাধীন স্বীকৃতি প্রদানকারী সংস্থা গঠন। এই সিদ্ধান্ত এসেছে মনাশ আইভিএফ-এর দ্বিতীয়বারের মতো ভুল ভ্রূণ স্থানান্তরের ঘটনার পর।
ফেডারেল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জাতীয় স্তরে একটি নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার সুবিধাগুলি এই পর্যালোচনায় মূল্যায়ন করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি রাজ্য ও অঞ্চলে একটি স্বাধীন যাচাইকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা নিয়ে পর্যালোচনা চলবে।
ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যারি-অ্যান থমাস বলেন, শুক্রবার মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে তিন মাসের একটি দ্রুত-পর্যালোনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রজনন প্রযুক্তি স্বীকৃতি কমিটি (RTAC) এই খাতটি পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, “যারা পরিষেবা দেন তারাই যদি নির্ধারণ করেন কে পরিষেবা দেবে, তাহলে সেটা সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয় না।”
এই সপ্তাহেই মনাশ আইভিএফ জানিয়েছে যে তারা মেলবোর্নের ক্লেটন ল্যাবরেটরিতে একটি ভুল ভ্রূণ স্থানান্তরের ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে, ২০২৩ সালে ব্রিসবেনে এক রোগী অন্য দম্পতির শিশুর জন্ম দেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
মনাশ আইভিএফ-এর প্রধান নির্বাহী মাইকেল ন্যাপ এই ঘটনার পর পদত্যাগ করেছেন। ফেডারেল স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেন, “আমি জনসাধারণের আস্থা নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন। এই খাতের স্বচ্ছতা ও স্বাধীন স্বীকৃতির প্রয়োজন।”
তিনি জানান, “গত পূর্ণ বছরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু আমি ফেডারেল মন্ত্রী হিসেবেও জানি না সেগুলোর বিবরণ কী, কারণ সেগুলো রিপোর্ট বা প্রকাশ করা হয় না।”
বাটলার আরও বলেন, “আমরা জানি অস্ট্রেলিয়াজুড়ে আটটি ভিন্ন নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা রয়েছে। ভবিষ্যতে জাতীয় নিয়ন্ত্রণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পরামর্শ দেবেন।”
তিনি বলেন, “আমার তৃতীয় সন্তান আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে জন্মেছে, তাই আমি জানি এই খাতে মানুষ কতটা আস্থা রাখে, যেন এটি এক অলৌকিক সন্তানের মতো।”
এই পর্যালোনার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ আরও স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে, বিশেষ করে যেসব সংস্থা ভ্রূণ সংরক্ষণ ও স্থানান্তরের মতো সংবেদনশীল কাজ করে।