মেলবোর্ন, ০৯ এপ্রিল— বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করলো মার্কিন ধনকুবের ইলন মাক্সের স্পেস এক্সের সহযোগী স্যাটালাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন’ এর অনুষ্ঠান স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। উপস্থিত সব অংশগ্রহণকারীর জন্য এই ইন্টারনেটসেবা উন্মুক্ত।
বিজনেস সামিটের তৃতীয় দিনে স্টারলিংকের এই পরীক্ষামূলক সেবা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে মহাকাশ ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার ব্যবহারে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, যা আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারনেট সেবার প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ ব্যস্ত শহরে উচ্চগতির ইন্টারনেটসেবার দেওয়ার জন্য স্টারলিংক বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে এটি পরিষেবা প্রদান করে থাকে। কানাডা ছিল স্টারলিঙ্ক পরিষেবা অনুমোদনকারী প্রথম বহির্বিশ্বের দেশ। সর্বশেষ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এই পরিষেবা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ চালু হলে প্রযুক্তি, অর্থনীতি, ই-লার্নিং, শিল্পখাত এবং নারীর ক্ষমতায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ষ্টারলিংক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে ইন্টারনেট সেবার দামও কমতে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্টারলিংকের মতো নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মূল সুবিধা হলো উচ্চগতির, তারবিহীন ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ। যা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা সম্ভব। বর্তমানে দেশের অনেক দ্বীপ, চর, পাহাড়ি এলাকা ও গভীর বনাঞ্চলে ফাইবার অপটিক ক্যাবল বা মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া কঠিন। এসব এলাকায় স্টারলিংক সহজেই ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে পারবে, যা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
এ ব্যাপারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব। সেখানে সরকার স্টারলিংকসহ টেক-জায়ান্ট কোম্পানিগুলো জায়গা দিতে প্রস্তুত। এই জন্য এর লাইসেন্সের যে বিধিবিধান আছে, সেইগুলোকে সহজ করা হয়েছে। লাইসেন্স ফি একেবারে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।