মেলবোর্ন, ২৭ মে— একটি ভাইরাল ভিডিওকে ঘিরে তুমুল আলোচনার মুখে পড়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিয়েতনামের হ্যানয় বিমানবন্দরে নামার পর স্ত্রী ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ তাঁর মুখে হাত দিয়ে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন। ঘটনাটি নিয়ে প্রথমে ‘ফেক ভিডিও’ দাবি করা হলেও পরে ম্যাক্রোঁ স্বীকার করেছেন যে ভিডিওটি সত্য, তবে সেটিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তোলা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্টের বিমানের দরজা খোলার পর ম্যাক্রোঁ দাঁড়িয়ে আছেন। ঠিক তখনই ব্রিজিত তাঁর মুখের কাছে দুই হাত তুলে কিছুটা ধাক্কা দেন। মুখে হতচকিত ভাব নিয়ে ম্যাক্রোঁ ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ান।
এই দম্পতি এরপর একসঙ্গে বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নামেন। সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় ম্যাক্রোঁ স্ত্রীর দিকে হাত বাড়ালে, ব্রিজিত তা গ্রহণ করেননি। এই দৃশ্য মুহূর্তেই ফ্রান্সের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে পরিণত হয়। প্রেসিডেন্টের দপ্তর প্রথমে একে “ভুয়া খবর” বলে উড়িয়ে দিলেও পরে ম্যাক্রোঁ নিজেই ভিডিওটি নিয়ে মুখ খোলেন।

ম্যাক্রোঁ বলেন, “আমরা কেবল মজার ছলে পরস্পরের সঙ্গে খেলছিলাম। এটা থেকে একটি ভূ-রাজনৈতিক সংকট তৈরি করার কিছু নেই। মানুষ এতে হাস্যকর ব্যাখ্যা খুঁজে বের করছে।” প্রেসিডেন্টের দপ্তরও পরে ব্যাখ্যা দিয়ে জানায়, “ওটা ছিল সফরে যাওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্ত। কিন্তু এই ঘটনাকেই ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের খাদ্য বানিয়ে ফেলা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ম্যাক্রোঁ মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর তৎকালীন শিক্ষক ব্রিজিতের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান, যিনি তখন তিন সন্তানের মা।
এটি ছিল চলতি মাসে ম্যাক্রোঁকে নিয়ে ভাইরাল হওয়া তৃতীয় ভিডিও। এর আগেও ইউক্রেন সফরের সময় তাঁকে কোকেন গ্রহণের অভিযোগ তুলে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। আবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে করমর্দনের সময় তাঁর আঙুল চেপে ধরার দৃশ্য নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়।
সবকিছু খণ্ডন করে ম্যাক্রোঁ বলেন, “আমি শুধু একটি টিস্যু তুলেছি, একজনের সঙ্গে করমর্দন করেছি, এবং স্ত্রীর সঙ্গে মজা করেছি। এর বেশি কিছু না। সবাইকে শান্ত হওয়া উচিত।”
তিনি এসব বিভ্রান্তির পেছনে রাশিয়া ও ফ্রান্সের উগ্রপন্থীদের যুক্ত থাকার ইঙ্গিত দেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ব্যঙ্গ করে বলেন, “এবার তো স্ত্রী থেকেই একটি ‘রাইট হুক’ খেলেন ম্যাক্রোঁ! এবারও কি ‘ক্রেমলিনের হাত’ দায়ী হবে?”
সূত্র: দ্য সান, এপি, টেলিগ্রাম,