মেলবোর্ন, ১১ মে- নিউ সাউথ ওয়েলসের কুনাবারাব্রানে দুই শিশুর করুণ মৃত্যুর ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে এসেছে। এই দুই ভাই — ম্যাক্স (৭) ও স্যাম (৬) —এর দাদি ক্যাথলিন জয়েস হেগস (৬৬) বর্তমানে দুই শিশুকে হত্যার অভিযোগে আদালতের মুখোমুখি হয়েছেন।
শনিবার পারামাট্টা লোকাল কোর্টে মামলাটি মাত্র পাঁচ মিনিট স্থায়ী হয় এবং হেগসকে জামিন না দিয়ে হেফাজতে রাখা হয়। পরবর্তী শুনানি ২১ মে নির্ধারিত হয়েছে।

(ছবি: 9নিউজ)
দাদির ফোনেই পুলিশের অভিযান
দাদি নিজেই ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুদের খোঁজখবর নিতে তারা ‘ওয়েলফেয়ার চেক’-এর জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের সহকারী কমিশনার রড হোল্যান্ড ২জিবি রেডিওর বেন ফোর্ডহ্যামকে বলেন, “আমি প্রত্যাশা করি হত্যার অভিযোগ অবশ্যই আনা হবে,” উল্লেখ করে যে অভিযুক্ত নারীকে এখনও চিকিৎসকরা মানসিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি আরও জানান, পুলিশ সদস্যদের ওই বাড়িতে জোর করে প্রবেশ করতে হয় এবং যারা ওই নির্মম দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদের কাউন্সেলিং ও মানসিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। “এটি ছিল এক অকল্পনীয় ট্র্যাজেডি।”
হোল্যান্ড এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান যে, সংবাদমাধ্যম news.com.au জানিয়েছে — দুই শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্ত (অটপসি) করা হবে।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ কমিশনার ক্যারেন ওয়েব বলেন, “এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি কেবল দুই শিশুর পরিবারের জন্য নয়, গোটা সম্প্রদায়ের জন্যই মর্মান্তিক।”
এদিকে, রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস মিনস সোমবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। দুই ছোট ছেলের এই অপূর্ব ভবিষ্যৎ হঠাৎই থেমে গেল — এ শোক কুনাবারাব্রান শহরের সবার মধ্যেই বয়ে চলেছে। আমি তাদের পরিবার, বন্ধু, শিক্ষক ও এই শহরের সবার প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
ওয়ারামবাংগল শায়ার কাউন্সিলর কোডি ব্র্যাডি বলেন, “পুরো সম্প্রদায়ের মতোই আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। ওরা ছিলো প্রাণচঞ্চল, দুষ্টু, ফুটবল আর কারাটে ক্লাসে তারা ছিল নিয়মিত, ফুলের মতো পবিত্র—ভীষণ প্রাণবন্ত আর ভালোবাসার।”
তিনি আরও বলেন, “যদি কারও মন খারাপ থাকে, কেউ যদি ভেঙে পড়েন—এক কাপ চা, একটু কথা বলার জন্য বা শুধু পাশে থাকার জন্য—আমরা আছি, দয়া করে জানান।”
ওরানা মিড-ওয়েস্টার্ন পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট এবং স্টেট ক্রাইম কমান্ডের হোমিসাইড স্কোয়াড যৌথভাবে স্ট্রাইক ফোর্স ডারনাম-এর অধীনে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনা শুধু আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নয়, গোটা সমাজের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য, শিশু সুরক্ষা এবং পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে আরও সচেতনতা তৈরি করছে।